ফেসবুক লাইভে সাকিবকে নিয়ে যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের অভাব আর নাই কিন্তু স্বভাবটা নষ্ট হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। শেয়ারবাজার কারসাজি নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অনুসন্ধানে মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসানের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা খবরের পর বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ফেসবুক লাইভে এসে এমন কথা বলেন তিনি।
লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে যারা আশাবাদী, যারা মনে করেন বাংলাদেশ নিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাবো- তাদের জন্যে এটি খারাপ সংবাদ। যারা মনে করেন যে দেশের ভবিষ্যৎ তাদের জন্য এটি দুঃসংবাদ। তাদের উদ্দেশ্যে আমার এই ভিডিও।
তিনি বলেন, আমাদের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান একটা জুয়ার কোম্পানিতে শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন। আইসিসি এবং আমাদের ক্রিকেট বোর্ড ঝামেলা করার কারণে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। আমি তখন তাকে তিন লাখ টাকা (সাকিব আল হাসান) দিতে চেয়েছিলাম।
সুমন বলেন, আবার আমরা যে খবর পাইছি আপনারা জানেন বাংলাদেশে যে শেয়ার কারসাজি হয়েছে কিছুদিন আগে- এটার সাথে সাকিব আল হাসান জড়িত, তার নাম আছে এটার মধ্যে। আর যারা এই কারসাজিটা করেছেন তারা কিছুদিনের মধ্যে ১৩৭ কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে লাভ করে নিয়েছেন। আমার যে বক্তব্যটা দেখুন, সাকিব আল হাসান দেড় কোটি ফলোয়ার তার। এই ফলোয়ারদের জন্য একজন মডেল তিনি। তাকেই মডেল মনে করা হয়। তাকে ফলো করেন এই তরুণরা।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, মজার বিষয় হচ্ছে যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, যারা শেয়ার মার্কেটটাকে নিয়ন্ত্রণ করেন তাদেরই শুভেচ্ছাদূত হচ্ছেন সাকিব আল হাসান। মানে সাকিব আল হাসানকে আনা হয়েছে তিনি শুভেচ্ছাদূত থাকবেন এবং আজ আরও একটি সংবাদ হলো দুদকেরও নাকি শুভেচ্ছাদূত সাকিব আল হাসান। এখন তাদের শুভেচ্ছাদূতের অবস্থা যদি এই হয় যে টাকা ছাড়া এই মানুষটা কিচ্ছু বোঝে না- তাহলে পরিণতি আমাদের বাংলাদেশের কোথায় দাঁড়ায় প্রশ্ন আপনাদের কাছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে বিভিন্ন সময় সাকিব আল হাসান বাংলাদেশকে সামনের দিকে নিয়ে গেছেন ক্রিকেটে। এ জন্য আমরা গর্ববোধ করি। আমরা অনেকে তার ফলোয়ার। আমাদের পছন্দের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। কিন্তু এই কৃতজ্ঞতা আমরা পরিশোধ করছি তার জন্য। এর বিনিময়ে কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি আমরা নেবো? উনি যাইচ্ছা তাই করছেন, যা ভালো লাগে তাই করছেন। স্বর্ণের ব্যবসা করছেন, শেয়ার কারসাজিতে জড়িত আছেন। এটা আমাদের জন্য হতাশাজনক।
দুদকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি দুদককে অনুরোধ করবো যদি উনি (সাকিব আল হাসান) শুভেচ্ছাদূত থেকে থাকেন তা হলে তাকে এখান তেকে বিদায় দেবেন কিনা এবং এই যে শেয়ার কারসাজির যে বিষয় দুদক কি দেখবেন কিনা- এটা দুদকের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই। নাকি আপনারাও এমন একটি শুভেচ্ছাদূত বানাইয়া একটা কারসাজির সঙ্গে নিজেরাও জড়াইয়া রাখবেন এটা আমার জানা নাই। আপনারাই এটা ক্লিয়ার করবেন।
তিনি বলেন, আমরা জানি আমরা আপনাদের শরণাপন্ন হই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণায়। পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই এই ধরনের মডেল ক্যারেক্টারগুলা যখন এই ধরনের কাজ করেন আপনি কোনোদিন তরুণ সোসাইটি যেটি জননেত্রী শেখ হাসিনা বলে থাকেন তরুণরা যারা আছে তারাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বানাবে। এই ধরনের মডেল ক্যারেক্টার যদি থাকে তা হলে কোনোদিন বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে না। কোনোদিন সোনার বাংলা হবে না।
ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, আর লুটপাট করার এত নেশা যদি এই ধরনের খেলোয়াড়দের থাকে তা হলে সেলিব্র্রেটিদের থাকে। দেখুন ওনারা খেলবেন, টাকা ইনকাম করবেন, তার নাকি বছরে প্রায় অনেক কোটি টাকা ইনকাম, ছয়-সাতশ কোটি টাকার মালিক নাকি সাকিব আল হাসান হয়ে গেছে। এরপরও শেয়ার কারসাজির সাথে জড়িত। এরপরও মনে হয় তার অভাব আর নাই কিন্তু তার স্বভাবটা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তারে বাঁচাইতে হবে। এখনই তাকে ঠিক করার সময়, নাহলে কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যাবে। সাথে সাথে দেশের তরুণরাও উদ্দেশ্যহীনভাবে সোনার বাংলা থেকে দূরে সরে যাবে।
এফএইচ/বিএ/এএসএম