সচল হচ্ছে আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপি আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পর হাইকোর্টে শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানি মুলতবি করে মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষে মামলার সাক্ষ্য ও জেরার অংশ পাঠ করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মনজু নাজনিন।
ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরিন জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার ছিল মামলার শুনানির চতুর্থ দিন। প্রতি বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি করা হয়। সে হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবার আবারও শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে।
আইনজীবী কাজী মো. সাজাওয়ার হোসেন আহসান উল্লাহ মাষ্টারের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিযুক্ত হয়েছেন বলে জাগো নিউজকে তিনি নিজেই জানান।
তিনি বলেন, নিন্ম আদালতের রায়ের পর দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পরে হাইকোর্টের বিচারের মাধ্যমে ভিকটিম ও অভিযুক্ত সকল আসামী ন্যায় বিচার পাবেন।
আসামী পক্ষের করা ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি মো ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃঞ্চাদেব নাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মামলার শুনানি চলছে।
বৃহস্পতিবার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আহসান উল্লাহ মাস্টারের সিনিয়র আইনজীবী কাজী মো. সাজাওয়ার হোসেন ও অ্যাডভোকেট এসএম আলিম।
অপরদিকে, আসামী পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়রর আইনজীবী টিএইচ খান, মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাইফুদ্দিন মাহমুদ সহ ২৮ জন আসামীর আইনজীবীগণ।
২০০৫ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের করা ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে এই মামলার শুনানি শুরু করেন আদালত। চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে এই মামলা শুনানির প্রকৃয়া শুরু হয়।
আহসান উল্লাহ মাষ্টারের আইনজীবী কাজী মো. সাজাওয়ার হোসেন বলেন, ১৪ জানুয়ারি থেকে মামলার পেপার বুক (নিথিপত্র)পাঠ শুরু হয়। ৩৪ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা পাঠ শেষ হয়েছে।
তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় ২০০৪ সালের ৭ মে নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে। ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন, ১৭ জন কারাগারে, বাকি ৯ জন পলাতক রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ আহসানুল্লাহ মাস্টার বেশি পরিচিত ছিলেন শ্রমিক নেতা হিসেবেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ, প্রতিটি নির্বাচনেই জয়ী হয়েছেন বিপুল ভোটে। দু`দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন গাজীপুর-২ আসন থেকে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ৯ নভেম্বর গাজীপুরের পূবাইল ইউনিয়নের হায়দরাবাদ গ্রামে আহসান উল্লাহ মাস্টার জন্ম গ্রহণ করেন। রাজনৈতিক জীবনে আহসান উল্লাহ মাস্টার আওয়ামী লীগ থেকে গাজীপুর সদর-টঙ্গী আসনে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুই বার সংসদ সদস্য, ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দুই বার পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া তিনি শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সস্পাদক, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।
এফএইচ/এএইচ/পিআর
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ চিকিৎসক পরিচয়ে প্রতারণা: ঢামেকে গ্রেফতার পাপিয়া কারাগারে
- ২ মেয়েসহ সাবেক মন্ত্রী আমুর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- ৩ যথাযথ আবেদন না থাকায় সাবেক মন্ত্রীসহ ১৩ আসামির পক্ষে শুনানি হয়নি
- ৪ ‘রাষ্ট্রীয় পদে যাওয়ার খবরে’ আসামিপক্ষে শুনানি করতে পারেননি সমাজী
- ৫ ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা কেন বাতিল করা হবে না, হাইকোর্টের রুল