বর্তমান সরকার থেকে জনগণ বিচ্ছিন্ন : বিচারপতি শরীফ উদ্দিন
সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি শরীফ উদ্দিন চাকলাদার বলেছেন, গণতন্ত্রে বর্তমান সরকার থেকে জনগণ বিচ্ছিন্ন। মঙ্গলবার শেষ কর্মদিবসে সুপ্রিমকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের ২৩ নম্বর বিচারিক কক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি শরীফ উদ্দিন চাকলাদার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছেন, জনগণের জন্য জনগণের দ্বারা জনগণের সরকারই গণতান্ত্রিক সরকার। কিন্তু এখন গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হচ্ছে সরকার জনবিচ্ছিন্ন, জনগণের ভোট কিনে সরকার জনগণ থেকে দূরে থাকে।
তিনি আরো বলেন, ‘তৃতীয় বিশ্বে গণতন্ত্র ক্ষমতায় যাওয়ায় এক ধরনের অস্ত্র। ক্ষমতায় গেলে যাহা বাহান্নো তাহা তেপ্পান্ন।’
বিচারপতি শরিফ উদ্দীন বলেন, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার পূর্বশর্ত গণতন্ত্র। গণতন্ত্র সুসংহত না হলে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা চিন্তা না করাই ভালো।
তিনি আরো বলেন, একাত্তর টিভির টকশোতে যেসব কথা বেঞ্চ এবং বারকে নিয়ে বলা হচ্ছে সেগুলোতে উচ্চ আদালতের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। টকশো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল আপনার সম্মান থাকলেও বিচারকদের সম্মান বলতে কিছু থাকছে না।
অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিচারপতি চাকলাদারের সাড়ে তের বছরের বিচারকি সময়ে তার কাজের ব্যাপক প্রশংসা করেন।
সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা বিচারপতি চাকলাদারকে বড় পরিসরে আপিল বিভাগ থেকে বিদায় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। আপিল বিভাগে চারজন বিচারপতির পদ খালি থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে সিনিয়র ও অভিজ্ঞ বিচারপতিদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিচারপতি চাকলাদার দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেছেন। যেখানে অনেক বিচারপতি দুই থেকে তিন বছর রায় ঝুলিয়ে রেখেছেন সেখানে বিচারপতি চাকলাদার রায় দিয়ে সাথে সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা করেছেন, যাতে করে কেউ তার রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে সিনিয়র আইনবিদ ব্যারিস্টার রফিক উল-হক, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাবেক সম্পাদক শম রেজাউল করিম, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদলসহ দুই শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি