ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ই-অরেঞ্জের অর্থপাচার বিষয়ে দুদককে নোটিশ করার নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০২২

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কাছে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা বিদেশে পাচারের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কোনো বক্তব্য আছে কি না, সেটি জানতে সংস্থাটির প্রতি নোটিশ করার জন্য প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের পক্ষে রিটকারী আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (৬ এপ্রিল) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম।

এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

রিট আবেদনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ গ্রাহকের টাকা বিদেশে পাচার করেছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে দুদককে কোনো নোটিশ করা হয়েছিল কি না, আদালত তা জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবী জানান, আমরা দুদক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আবেদন করেছি। এরপর বিদেশে গ্রাহকের অর্থ পাচার নিয়ে আদালতে উপস্থাপন করা অভিযোগের একটি কপি দুদককে দিতে নির্দেশ দেন আদালত। এ বিষয়ে তাদের (দুদকের) কোনো বক্তব্য থাকালে সেটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদালতে সেটি উপস্থাপন করবেন।

ই-অরেঞ্জ গ্রাহকের কাছে আটকে থাকা ৭৭ কোটি টাকা ফেরত চেয়ে পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের করা রিটের শুনানি গতকাল মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার (৬ এপ্রিল) দিন ধার্য ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ দুদককে অভিযোগের লিখিত কপি দেওয়ার আদেশ দেন আদালত

এ বিষয়ে এম আব্দুল কাইয়ুম জাগো নিউজকে বলেন, ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ ওঠে। প্রতিষ্ঠার মাত্র দু-এক বছরের মধ্যে গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্টের নামে তাদের কাছ থেকে প্রায় ৭৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ই-অরেঞ্জ। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম্পানিটি বিপুল অর্থ এরই মধ্যে বিদেশে পাচারও করেছে।

তিনি জানান, গ্রাহকেরা অনেক চেষ্টা করেও পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। এ অবস্থায় ই-অরেঞ্জের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ শতাধিক গ্রাহক এ রিট আবেদন করেন। রিটে ই-অরেঞ্জের অর্থের উৎস অনুসন্ধানসহ গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের পক্ষে ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম এ রিট আবেদন করেন।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ ব্যাংক, ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বীথি আক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে গ্রাহকদের পক্ষে প্রতিনিধি ছিলেন- মোহাম্মদ আফজাল হোসাইন, আরাফাত আলী, তারেকুল আলম, শাকিবুল আলাম সোহাগ, রানা খান ও হাবিবুল্লাহ জাহিদ।

রিটে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি ই-ওয়ালেট, গিফট কার্ডসহ অন্যান্য অননুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায় থেকে প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

অর্ডারের টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে।

এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস