ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

গেটওয়েতে আটকে থাকা ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের টাকা ফেরত চেয়ে নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৫৩ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের তিন কোটি পঁচাত্তর লাখ টাকা ফেরত চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ইমেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশ ই-কমার্স কাস্টমারস অ্যাসোসিয়েশন এবং ই-অরেঞ্জ’র ৫১ গ্রাহকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, নগদ, বিকাশ, এসএসএল কমার্সসহ সংশ্লিষ্ট ১২ জনকে বিবাদী করা হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে।

নোটিশের বিষয়টি জাগো নিউজকে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী নিজেই।

নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক আর্থিক লেনদেন তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে অনলাইন পেমেন্টের সুবিধা, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মতো ই-কমার্সভিত্তিক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠার মাত্র দুই-এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন অফারের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী এই কোম্পানি বিপুল অর্থ এরই মধ্যে বিদেশে পাচার করেছে।

ই-ওয়ালেট, গিফ্ট কার্ডসহ আরও অন্যান্য অননুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায়। কিন্তু তারা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

নোটিশে আরও বলা হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যে সম্ভাবনা সেটিও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। নোটিশ গ্রহীতারা কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না।

‘ভুক্তভোগী নোটিশ প্রেরণকারী গ্রাহকদের সমুদয় টাকা ফেরত প্রদান, দুদকের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ই-অরেঞ্জ কর্তৃক পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ নিরুপণ করে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, এ পর্যন্ত ই-অরেঞ্জ মোট কত টাকা লেনদেন করেছে এবং গ্রাহকরা মোট কত টাকা দিয়েছে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে চিহ্নিত করা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-অরেঞ্জ’র নোটিশ প্রেরণকারী গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানাতে বলা হয়েছে।’

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ই-অরেঞ্জ শপের ৫১ জন গ্রাহক ২০২১ সালের মে, জুন ও জুলাই মাসে বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ের জন্য টাকা পরিশোধ করে এখন সর্বস্বান্ত। টাকা পরিশোধ করলেও পণ্য সরবরাহ না করায় ৫১ জন গ্রাহকের ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৯৯৩ টাকা পেমেন্ট গেটওয়ে এসএসএল’র অ্যাকাউন্টে আটকে আছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে পরিশোধিত অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

গ্রাহকরা অনেক চেষ্টা করেও উক্ত টাকা ফেরত না পেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। গত কয়েক বছরে এ প্রতিষ্ঠানটি সরকারের দপ্তরগুলোর কার্যকর নজরদারীর অভাবে গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্টের নামে গ্রাহকদের প্রলুদ্ধ করে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। তাই ই-অরেঞ্জের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এফএইচ/এমএইচআর/এএসএম