আবরার হত্যার রায়: আদালত পাড়ায় উৎসুক জনতার ভিড়
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা ঘিরে আদালত পাড়ায় উৎসুক মানুষের উপচেপড়া ভিড় লেগেছে। সকালে আবরারের বাবা ও আসামিদের স্বজনেরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোচিত এ রায়কে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ, আইনজীবী, পুলিশ, সাংবাদিকদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে আদালত প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত বেলা ১১টায় উৎসুক জনতা রায় শোনার জন্য অধীর আগ্রহে আদালতের বাইরে অপেক্ষা করছেন।
আবরার হত্যা মামলার রায় ঘিরে আদালত পাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি। আদালত পাড়ার প্রধান ফটক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
গত ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। তবে রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায় ঘোষণার জন্য ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
আগের ধার্য দিনে রায় ঘোষণা না করার বিষয়ে বিচারক বলেন, রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন, তা বিশ্লেষণ করে রায় প্রস্তুত করা এখনো সম্ভব হয়নি। রায় প্রস্তুত করতে আরও সময় লাগবে। তাই এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হলো।
গত ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায় ঘোষণার জন্য ২৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ওই দিনগত রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন ও তদন্তে প্রাপ্ত আরও ছয়জন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন ও এজাহার-বহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
গ্রেফতার ২২ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।
মামলার তিন আসামি এখনো পলাতক। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহার-বহির্ভূত আসামি।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় মোট ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
জেএ/আরএসএম/এমআইএস/রায়হান আহমেদ/এমকেআর/এমএস
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ মামুন-জিয়াসহ সাতজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে
- ২ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে শেয়ারট্রিপের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
- ৩ ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা আইনজীবী কল্যাণ সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি
- ৪ বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস: পিএসসির দুই কর্মচারী কারাগারে
- ৫ দুই মামলায় অব্যাহতি পেলেন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির ১২৫ নেতাকর্মী