দুদকের অনুসন্ধান থেকে আ’লীগ নেতাকে বাদ দেওয়া কেন অবৈধ নয়
টিআর ও কাবিটা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শিবলী সাদিকের নাম দুর্নীতি মামলার অনুসন্ধান থেকে বাদ দেওয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, শিবলী সাদিকসহ সংশ্লিষ্ট ছয়জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৪ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি জাহিদ সারওয়ার কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারির আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফ।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মো.সাজ্জাদ হোসেন।
ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফ জানান, দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ২০১৭ সালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদকের অনুসন্ধান শেষে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রমাণিত না হওয়ায় তার নাম বাদ দিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
টিআর ও কাবিটা প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) শেখ ফাইয়াজ আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, এম শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে উল্লেখিত বিষয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রমাণিত না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক অনুসন্ধান পরিসমাপ্ত করা হয়েছে।
এরপর এ বিষয়টি জানতে পেরে রোববার (৩ অক্টোবর) দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রম থেকে শিবলী সাদিকের নাম বাদ দেওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন দেলদুয়ারের স্থানীয় বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আশরাফুল ইসলাম।
আদালতের শুনানিতে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুদকের মামলায় পাঁচ বছর সাজা হয়। এরপর হাইকোর্টে সেই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের এ নেতার নাম দুদকের অনুসন্ধান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যেখানে পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি এই টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়েছেন তিনি।
রিটকারী আইনজীবী এম আশরাফুল বলেন, সাবেক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের বরাদ্দকৃত টিআর-এর ২৭ লাখ টাকা দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শিবলী সাদিক ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। দুস্থ, অসহায় পরিবার ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে টিআর বরাদ্দ দেওয়ার বিধান থাকলেও দেলদুয়ারে চলছে হরিলুট। বিষয়টি নিয়ে দুদক অনুসন্ধানে নামে। অনুসন্ধান করে দুদক তার নামসহ অভিযোগটিও বাতিল করে দেয়। এ কারণে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে আমি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হই। আজ আদালত আমার আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন।
এফএইচ/এআরএ/জেআইএম