বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বইয়ের মেধাস্বত্ব জালিয়াতি, হাইকোর্টে রায় আজ
মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য মহান স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় করা রিটের ওপর রুলের বিষয়ে রায় ঘোষণা হতে পারে আজ।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও মো.খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হবে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন।
এর আগে গত ১৬ মার্চ এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। এরপর রায়ের জন্য সিএভি করেন হাইকোর্ট। একই বেঞ্চ শুনানি শেষে রায়ের দিন ঠিক করে এ আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য ই-বই সরবরাহের নামে ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে প্রকাশনা সংস্থা জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এছাড়া স্বাধীকা পাবলিশার্স নামের একটি প্রকাশনার বিরুদ্ধে আরও তিন কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ দুটি প্রকাশনা সংস্থাই নাজমুল হোসেন নামের এক ব্যক্তির, যিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর নামে বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতি তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবকে প্রধান করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হককে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি এ নিয়ে করা রিটের ওপর রুল জারি করেন আদালত। পরে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
গত বছরের ৩১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগে যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিটে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছিল।
মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য আটটি বই কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। যার মধ্যে তিনটি বই নিয়েই জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠে নাজমুল হোসেন নামে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।
‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং ‘৩০৫৩ দিন’ বইটির পাশাপাশি অধ্যাপক নাসরিন আহমদ সম্পাদিত ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটিরও মেধাস্বত্ব চুরি করে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দুটি প্রকাশনা সংস্থার মালিক সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, অবাক করা বিষয় হলো, এ দুর্নীতি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বই নিয়ে। এটা সহ্য করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, এ বইগুলো প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এগুলোর ছাড় দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া বইগুলোর ছাড় পাওয়া সম্ভব নয়।
এফএইচ/এমকেআর/এএসএম