ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ফোনে আড়িপাতা রোধে রিটের শুনানি কার্যতালিকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:১৩ এএম, ৩১ আগস্ট ২০২১

আড়িপাতা রোধে এবং ফাঁস হওয়া ফোনালাপের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনটি শুনানির জন্য আজকের কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) রয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানি হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে গত ১৬ আগস্ট আড়িপাতা রোধে এবং ফাঁস হওয়া ফোনালাপের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে পেছানো হয়েছিল। ওইদিন আবেদনটি সংশ্লিষ্ট কোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার সময়ের আবেদন করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ শুনানিতে থাকবেন জানিয়ে বিপুল বাগমার সময় চাইলে আদালত শুনানি দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুনানির জন্য উঠছে আবেদনটি।

সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী গত ১০ অগাস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন। আবেদনে বিভিন্ন সময়ে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের ঘটনা তদন্তে নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

ফোনে আড়িপাতা ঠেকাতে আইন অনুযায়ী বিটিআরসির নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চেয়ে গত ২২ জুন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তারা উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। তার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ওই রিট আবেদন করেন তারা।

রিটে ২০১৩ সাল থেকে এপর্যন্ত ২০টি আড়িপাতার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সংবিধানে এ অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।

সংবিধানের তৃতীয় ভাগে যেসব মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ আছে তার মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা সংরক্ষণ অন্যতম। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ - এর ৩০ (চ) ধারা অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করাও কমিশনের দায়িত্ব।

আবেদনে বলা হয়, দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশনের দায়িত্ব হলো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা।

২০১৯ সালের ২৮ অগাস্ট হাইকোর্টের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চের দেওয়া রায়ে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণও রিট আবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এ ক্ষেত্রে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব সর্বাধিক। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ তাদের দায়িত্ব। তারা আইনের বিধান ব্যতিরেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য প্রদান করতে পারে না।

রিট আবেদনে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩০ (১) (চ) ধারা এবং সংবিধানের ৩৯ ও ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত আইনজীবী মওদুদ আহমদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ, ভিকারুননিসা নূন কলেজের অধ্যক্ষের ফোনালাপ, মামুনুল হকের ফোনালাপ, যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের ফোনালাপ, ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের ফোনালাপ, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনাও রিটে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত রুল জারি করলে কমিটি গঠন করে ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত ফোনালাপের ঘটনাগুলো তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে সেখানে।

এফএইচ/এমআরআর/জেআইএম