ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ভাই হত্যায় ভাইয়ের স্বীকারোক্তি: তদন্ত কর্মকর্তার অপরাধ মারাত্মক

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:২৩ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২১

বগুড়ায় ছোট ভাইকে হত্যার ঘটনায় ১২ বছর বয়সী বড় ভাই সৌরভের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনাকে তদন্ত কর্মকর্তার (আইওর) মারাত্মক অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তার নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আবেদনে আদালত সন্তুষ্ট নন। এ বিষয়ে আরও শুনানির জন্য আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত শুনানি নিয়ে রোববার (২২ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

‘দুই পুলিশের ভুলে ১২ বছরের শিশুর ঘাড়ে ছোট ভাই হত্যার দায়’ শিরোনামে একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ সংযুক্ত করে হাইকোর্টে আবেদন করেন মোহাম্মদ শিশির মনির।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের তলব করেন। আদালতের আদেশে রোববার সকালে তদন্ত কর্মকর্তা (পিবিআই) মুনসুর আলী এবং সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার আদালতে হাজির হন। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, ‘পুনরায় তদন্ত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছে। যেটা সহজে দেখা যায় না। সাধারণত দেখা যায় পিটিশনাররাই পুনরায় তদন্তের আবেদন করেন। কিন্তু এ মামলায় দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রপক্ষই আবেদন করেছে।’

‘তদন্ত কর্মকর্তা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এখন তার আবেদনে আপনারা যদি সন্তুষ্ট হন তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘উনি যদি ভুল করেন তাহলে তাকে কি আমরা ছেড়ে দেব?’

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সেটা আপনাদের বিবেচনার উপর ছেড়ে দিচ্ছি। আমি বলতে চাচ্ছি, হি অলসো পার্ট অব দ্য প্রসিকিউশন। তিনি যে ভুল করেছেন, সে ভুলের জন্য তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।’

তখন আদালত বলেন, ‘এটা মারাত্মক অপরাধ, যেটা তিনি করেছেন। তিনি এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করেছেন। ১২ বছরের একটি শিশুর স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে ‘আমি আমার ভাইকে মেরে ফেলেছি।’ এটা কি সম্ভব? ১২ বছরের একটি ছেলে ৮ বছরের একটি ছেলেকে মেরে ফেলবে?’

পরে আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে দেন। সেদিন সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমারকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

গত ২৯ জুন এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই দিন শুনানিতে আদালতে যুক্ত ছিলেন শিশু সৌরভসহ তার মা ও বাবা।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। ২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালি গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় মহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগের মরদেহ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বড় ভাই সৌরভকে। জোর করে হত্যার স্বীকারোক্তিও নেওয়া হয়। এ মামলায় এখন বাড়ি ছাড়া পুরো পরিবার। এদিকে সন্তান হত্যা এবং আরেক সন্তানকে মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে রক্ষা করতে কোনো উপায় না পেয়ে দিশেহারা পরিবারটি।

এফএইচ/এমএইচআর/এমকেএইচ