নর্থসাউথের দামি গাড়ি নিয়ে আপিল বিভাগে আলোচনা
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চায় না অথচ ভ্যাট দিতে না চাইলেও ট্রাস্টিদের জন্য কিনেছে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বিলাসবহুল গাড়ি। সম্প্রতি নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিদের জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকার রেঞ্জ রোভার গাড়ি ক্রয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ কথা জানিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। পরে বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারক ও আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ইংলিশ মিডিয়াম সানিডেল স্কুলের ভ্যাট-ট্যাক্স সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিকালে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
সানিডেল স্কুলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আহসানুল করিম। শুনানিকালে তিনি বলেন, ‘স্কুলের ভ্যাট-ট্যাক্স অভিভাবকদের কাছ থেকে নিয়েই সরকারকে পরিশোধ করতে হবে।’ অন্যথায় স্কুল থেকে কীভাবে ভ্যাট পরিশোধ করবে সে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট প্রসঙ্গ এলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘মাই লর্ড, সেদিন পত্রিকায় দেখলাম একটি প্রাইভে ইউনিভার্সিটি সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে পাচঁটা না সাতটা গাড়ি কিনেছে। যে গাড়িগুলো তাদের ট্রাস্টিদের দেওয়া হয়েছে।’
তখন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, ‘এটা কোন ইউনিভার্সিটি বলেন। জেনে রাখা দরকার।’ তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এনএসইউ (নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি)।’
বিচারপতি বলেন, ‘তাহলে ট্রাস্টি হলেই তো লাভ।’ এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘টাকা ইনকাম যদি বেশি হয় তাহলে তো হবেই।’ তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘অথচ চুক্তি আছে ট্রাস্টি হয়ে কোনো সুবিধা নেবেন না।’
এ সময় আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘ক্যাশে নিচ্ছেন না। অন্যভাবে নিলেন আরকি। তবে খবরে দেখলাম লজ্জায় পড়ে তারা গাড়ি ফেরত দিয়েছেন।’
নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেনা দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যরা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করছেন- এমন অভিযোগ ওঠার পর সমালোচনার মুখে এসব গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফেরত দিয়েছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ নয় সদস্য।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের নানা রকম অনিয়মের অভিযোগের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ গাড়িসংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে। এ নিয়ে তদন্তও করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এফএইচ/ইএ/এএসএম