ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

দেশের সব গ্রাম পুলিশকে টিকা দিতে আইনি নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২১

বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা প্রদান এবং সুরক্ষা সামগ্রী প্রদানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

ই-মেইলযোগে পাঠানো নোটিশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং আইইডিসিআর’র পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। ’

ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, প্রাণঘাতী করোনা মহামারির শুরু থেকেই ঝুঁকি নিয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনীর প্রায় ৪৬ হাজার সদস্য ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করে আসছেন।

দেশের গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সব সদস্যের টিকার জন্য রাজবাড়ী জেলার আলীপুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ বাহিনীর দফাদার উজ্জ্বল খান, মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার রমজানপুর ইউনিয়নের মহল্লাদার সাইদুল দেওয়ান এবং রাজবাড়ী সদর উপজেলা ৬ নং খানখানাপুর ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার মজিবর রহমান এই নোটিশ পাঠান।

দ্রুত গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদান এবং তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা না হলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার জন্য হাইকোর্টে প্রতিকার চেয়ে রিট মামলা দায়ের করা হবে।

নোটিশে বলা হয়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনীর প্রায় ৪৬ হাজার সদস্য ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে নিজেদের জীবন বাজি রেখে গ্রাম-গঞ্জে করোনা প্রতিরোধে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, করোনা রোগে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের দাফন করা, সরকারঘোষিত লকডাউন কার্যকর করা এবং অন্যান্য সেবা প্রদান করার জন্য পুলিশ বাহিনী এবং উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে অনেক গ্রাম পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।এখনো অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি প্রত্যেক বিভাগীয় কমিশনার নোটিশ জারি করে প্রত্যেক উপজেলায় কমিটির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং ওই কমিটিতে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ এবং প্রশাসনসহ সেবা প্রদানকারী সংগঠনের মতোই গ্রাম পুলিশ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য করোণা আক্রান্তের চরম ঝুঁকি নিয়ে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন।

অথচ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারের নির্ধারিত করোনার টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করার জন্য গ্রাম পুলিশ বাহিনীর জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।

এছাড়া করোনাকালীন ডিউটি করার জন্য তাদের কোনো ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জামাদি প্রদান করা হয় না। অন্যান্য পুলিশ বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং সেবাপ্রদানকারীদের মতোই বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এটি সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার।

নোটিশে আরও বলা হয়, অন্যান্য সেবা প্রদানকারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। অতএব গ্রাম পুলিশ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদানের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে সুযোগ করে দেয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।

এসব দিক তুলে ধরে গ্রাম পুলিশের পক্ষ হয়ে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী দ্রুত গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা প্রদান এবং তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা না হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার জন্য প্রতীকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও জানান আইনজীবী।

এফএইচ/ইএ/জিকেএস