ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ছেলেকে ছাড়াতে এসে বাবাকেও দিতে হলো জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪১ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২১

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনের (বিধিনিষেধ) ষষ্ঠদিন আজ। লকডাউন চলাকালে আজ মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করায় মোহাম্মদ রাব্বানী নামে এক যুবককে (১৮) আটক করে লালবাগ থানা পুলিশ। খবর শুনে তার বাবা মোহাম্মদ সেলিম (৪৫) তাকে ছাড়াতে আসেন। তাকেও আটক করে আদালতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। আদালত ডিএমপি অধ্যাদেশ আইনে তাদের একশ টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা দিয়ে তারা আদালতের হাজতখানা থেকে বের হয়ে যান।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত বিধিনিষেধ অমান্য করায় ৭৫৮ জনকে জরিমনা করেন। এদের মধ্যে রাব্বানী ও তার বাবা সেলিম ছিলেন।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ রাব্বানী বলেন, ‘আমি মাস্ক ছাড়া লালবাগ এলাকায় ঘোরাফেরা করছিলাম। এ সময় আমাকে পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আমার বাবা মাস্ক পরে আমাকে ছাড়াতে থানায় আসেন। বাবাকেও পুলিশ আটক করে। আজ আদালত আমাদের একশ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা দিয়ে আমরা বের হয়ে এসেছি।’

রাব্বানীর বাবা সেলিম বলেন, ছেলের আটকের খবর শুনে আমি মাস্ক পরে লালবাগ থানায় যাই। সেখানে যাওয়ার পর কয়েকজন পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন কেন আসলেন থানায়। আমি বলি আমার ছেলেকে কী অভিযোগে আটক করেছে তা জানতে আসলাম। এরপর তারা আমাকে বলে আপনার ছেলে মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করায় তাকে আটক করা হয়েছে। তারা আমাকে চলে যেতে বলেন। আমি বের হয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন আমাকে ডাকেন। এরপর ওসি সাহেব আমাকে আটক করেন। আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনে থানায় যাওয়ার পরও আমাকে ওসি সাহেব আটক করেন।

এ বিষয়ে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, মাস্ক ছাড়া চলাফেরা করায় আমরা রাব্বানীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। এরপর তার বাবা সেলিম মাস্ক ছাড়া ছেলেকে ছাড়াতে থানায় আসেন। তার মাস্ক না থাকায় আমরা তাকেও আটক করি। আজ ডিএমপি অধ্যাদেশ আইনে তাদের আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি। কারণ আমাদের জরিমানা করার এখতিয়ার নেই।

আজ ষষ্ঠদিনে বিধিনিষেধ অমান্য করায় ৭৫৮ জনকে একশ টাকা করে জরিমানা করেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এর মধ্যে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ৬০ জনকে দুই ঘণ্টা হাজতবাস করে সাধারণ ক্ষমা করে দেন।

আদালত থেকে পাওয়া তথ্যমতে, কঠোর বিধিনিষেধ চলার ষষ্ঠদিন পর্যন্ত তিন হাজার ৫৮৩ জনকে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ২৬৩ জন, শুক্রবার (২ জুলাই) ৬২৯ জন, শনিবার (৩ জুলাই) ৬০৭ জন, রোববার (৪ জুলাই) ৬৩৬ জন, সোমবার (৫ জুলাই) ৬৯০ জন ও মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ৭৫৮ জনকে জরিমানা করা হয়।

এদের মধ্যে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় বৃহস্পতিবার তিনজন, শুক্রবার ৫৪ জন ও শনিবার ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। রোববার জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ৯৩ জন, সোমবার ৭০ জন ও মঙ্গলবার ৬০ জনকে সাধারণ ক্ষমা করেন আদালত। আদালত চলাকালীন তারা হাজতবাস করেছেন।

ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানার কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের ষষ্ঠদিনে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন থানা থেকে ৭৫৮ জনকে আদালতে আনা হয়েছে। ডিএমপি অধ্যাদেশ আইন প্রত্যেককে একশ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত। এদের মধ্যে ৬০ জন জরিমানা টাকা দিতে না পারায় তাদের দুই ঘণ্টা হাজতবাস করার পর ছেড়ে দেন।

জেএ/বিএ/এমএস