ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

দোষ স্বীকারের প্রশ্নই আসে না : খন্দকার মাহবুব

প্রকাশিত: ০৭:৩৬ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০১৫

‘অপরাধ স্বীকার করে শুধু মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে অব্যাহতি চান নিজামী’- অ্যাটর্নি জেনারেলের এমন মন্তব্যের জবাবে নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে’? ‘প্রশ্নই আসে না, তাহলে মামলা করলাম কী করে?’

এমন মন্তব্য করে বুধবার বিকেলে তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেবের বক্তব্য আমি যা শুনলাম টিভিতে তা ফৌজদারি আইন সম্পর্কে অজ্ঞতাপূর্ণ। আমরা বলেছি যে, সাক্ষ্য-প্রমাণে নিজামী সাহেবের অপরাধ প্রমাণিত হয় না।

নিজামীর আইনজীবী বলেছেন, দোষ স্বীকার করেছেন বলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়। প্রসিকিউশন নিজামীর অপরাধ প্রমাণ করতে পারেননি। তারপরও আদালত দোষী মনে করলে বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনায় তার মৃত্যুদণ্ড কমাতে পারেন।

বুধবার দুপুরে মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের যুক্তিতর্ক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আদালতে আমরা বলেছি, জামায়াতে ইসলামীর সদস্য হিসেবে মতিউর রহমান নিজামী পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষা করায় বিশ্বাস করতেন। এ বিশ্বাসে তিনি পাকিস্তানকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে খুন, হত্যা, ধর্ষণের মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এক রকম বক্তব্য দিয়েছেন আবার আদালতে এসে ভিন্নভাবে সাক্ষী দিয়েছেন। প্রসিকিউটররা সাক্ষীদের সেফ হোমে দিনের পর দিন প্রশিক্ষণ দিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। হত্যা বা ধর্ষণের মতো কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি।’

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ১৯৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছাত্রসংঘের দায়িত্বে ছিলেন নিজামী। তারপরে অন্যজন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর অধীনে ছিল দেশ। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল-বদর বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতো।

খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী হত্যায় নিজামী জড়িত ছিলেন না। নিজামী ওই সময়ে ১৯-২০ বছরের একজন যুবক ছিলেন। আলবদর বাহিনীর হয়ে একজন যুবক এতো মানুষকে হত্যা করেছেন এমন কোনো তথ্য প্রসিকিউশন দিতে পারেননি। তবু আদালতে বলেছি, আমাদের দৃষ্টিতে তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ প্রমাণ করতে পারেননি প্রসিকিউশন।’

‘আদালত যদি মনে করেন দোষী তাহলে মতিউর রহমান নিজামীর বয়স ও শারীরিক অসুস্ততা বিবেচনায় সর্বোচ্চ দণ্ড কমাতে পারেন। ফৌজদারি মামলায় এ আবেদন করার সুযোগ সব সময় থাকে। তবে এর অর্থ এ নয় যে; আইনজীবীরা দোষ স্বীকার করে মৃত্যুদণ্ড কমানোর আবেদন করেছেন’, বলে উল্লেখ করেন খন্দকার মাহবুব।

বুধবার আপিল শুনানির নবম কার্যদিবসে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যুক্তিতর্ক শেষ করেন আসামিপক্ষ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আগামী সোমবার (৭ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার দিন ধার্য রয়েছে।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকার মেশিনারি ব্যবহার করে সেফহোমে রেখে সাক্ষীদের আদালতে উপস্থাপন করেছে। আর এর প্রমাণ মিলেছে সাক্ষীদের ভিন্ন বক্তব্যে। কারণ, তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে কথা বলেছেন তা আদালতে বলেননি।

তিনি বলেন, মতিউর রহমান নিজামীর আপিল মামলার শেষ প্রান্তে বলেছি, অনেকগুলো অভিযোগের কোনোটিতে যদি মনে হয়, অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে আসামির বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে তাকে লঘুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য তিনি।

নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, অনেক চার্জ আছে যাতে উনি খালাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তারপরেও যদি কোনো চার্জে তাকে দণ্ড দেয়া হয় তাহলে চরমদণ্ড দিবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি না।

নিজামীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করার পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।

এফএইচ/বিএ