ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

সেই মিমের দায়িত্ব নিতে চান ব্যারিস্টার আহসান

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৫৩ এএম, ০৫ মে ২০২১

 

সম্প্রতি পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও দুই বোনকে হারানো শিশু মিমের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূঁইয়া।

বুধবার (৫ মে) দুপুরে মিমের যাবতীয় দায়িত্ব নিতে আগ্রহের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন তিনি নিজেই।

তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনায় তার মা- বাবা ও বোন মারা যাওয়ায় শিশুটির কেউ নেই, এটা জেনে আমি তার লেখাপড়া থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সবকিছুর দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। এখন সে তার নানা-নানীর আশ্রয়ে আছে। তারা যদি রাজি থাকে তাহলে তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি তার সব দায়িত্ব নিতে চাই এবং ঢাকায় একটি স্কুলে ভর্তি করে লেখা পড়ার ব্যবস্থা করব। আর যদি তারা কারও কাছে দত্তকও দিতে চান তাহলে আমরা আলোচনা করে রাজধানীর ভালো পরিবার দেখে ব্যবস্থা করতে পারব। যেখানে আমরা সবাই মিলে তার খোঁজ-খবর রাখতে পারব।’

ব্যারিস্টার আহসান জানান, ‘শিশুটির গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায়। আর সে এখন থাকে খুলনায়। আজ সকালে শিবচর থানা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি খুলনার সংশ্লিষ্ট থানার নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছেন। তারা সবাই আমাকে হেল্প করবেন। এ বিষয়ে এখন সংশ্লিষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবো। এরই মধ্যে শিবচরের সংসদ সদস্য নূরে আলম চৌধুরী লিটনের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনিও এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।’

এর আগে এদিন ভোরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ব্যারিস্টার আহসান লেখেন, ‘মিম এর থাকা-খাওয়া, জামা-কাপড়, শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন এবং সুন্দর মানসিক ও পুষ্টিকর শারীরিক বিকশের জন্য যাবতীয় দায়িত্ব নেয়ার প্রাথমিক সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি। বর্তমানে সে তার নানা-নানির সাথে আছে। যেহেতু তারাই এখন তার গার্ডিয়ান, তাই এখনি তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তবে তার নানা-নানির বয়স, আর্থিক সচ্ছলতা এবং তার সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় তাকে যত দ্রুত সম্ভব ঢাকায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া করছি। তেরখাজা উপজেলার ইএনও আবিদা সুলতানার সাথে কথা হয়েছে।তিনি শীঘ্রই অত্র এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যান এবং এলাকার গণ্যমান্য বাক্তিদের সাথে পরামর্শক্রমে এই বিষয়ে আমাকে সহযোগিতা করবেন জানিয়েছেন। অত্র এলাকার এমপি মহোদয়ের সাথে আজকে এই বিষয়ে কথা হবে। উদ্ধারকৃত শিবচর এলাকার মাননীয় এমপি লিটন চৌধুরী জানিয়েছেন আমি যদি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেই তাহলে তিনিও মিমকে দ্রুত ঢাকায় আনার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।’

মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে আহসান হাবিব বলেন, ‘মুহূর্তের দুর্ঘটনায় আট বছর বয়সী মেয়েটির জীবন সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে! তবে আল্লাহ্‌ সহায় থাকলে, তার একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারবো ইনশাল্লাহ। আমার ইচ্ছে তাকে একটি ভালো স্কুলে পড়ানো এবং ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানো। অনেকেই তাকে দত্তক নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে যোগাযোগ করছেন। যদি আমার থেকে ভালো অপশন পাওয়া যায় তাহলে আইনগত পক্রিয়ায় সেই ব্যবস্থাও করবো তার নানা-নানির অনুমতি সাপেক্ষে, অন্যথায় সকল দায়িত্ব আমাদের পরিবর্তন করি ফাউন্ডেশনের পক্ষে আমিই পালন করবো ইনশাল্লাহ।’

ছোট্ট শিশুটির পাশে দাঁড়াতে তাকে যারা সহায়তা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায় উপস্থিত হয়ে মিমকে সাহায্য করা, তার বাবা-মার লাশ দাফনে সহযোগিতা করা এবং আমাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য শিবচর উপজেলার ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যমুনা টিভিকে ধন্যবাদ এই ধরনের একটি মানবিক সংবাদ প্রচার করার জন্য এবং ধন্যবাদ যারা ওই ভিডিওর কমেন্টে আমাকে ট্যাগ করে ও মেসেজে ভিডিওটি পাঠিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’

সবাই দোয়া করবেন মিম এর জন্য।’

ছোট্ট শিশুটির পাশে দাঁড়াতে তাকে যারা সহায়তা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায় উপস্থিত হয়ে মিমকে সাহায্য করা, তার বাবা-মার লাশ দাফনে সহযোগিতা করা এবং আমাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য শিবচর উপজেলার ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যমুনা টিভিকে ধন্যবাদ এই ধরনের একটি মানবিক সংবাদ প্রচার করার জন্য এবং ধন্যবাদ যারা ওই ভিডিওর কমেন্টে আমাকে ট্যাগ করে ও মেসেজে ভিডিওটি পাঠিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’

‘দীর্ঘমেয়াদী একটা সিদ্ধান্ত নিলাম।

 

এবারই প্রথম নয়। তরুণ এই আইনজীবী এর আগেও বিপদগ্রস্ত এক রিকশাচালককে ব্যবসার জন্য অর্থ সহায়তা  করেছিলেন।

গত ৩ মে পদ্মায় স্পিডবোট ডুবিতে বাবা-মা ও দুই বোনকে হারিয়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় শিশু মিম। দুর্ঘটনার পর নদীতে একটি ব্যাগ ধরে ভাসছিল সে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।

ওই দুর্ঘটনায় মিমের বাবা মনির হোসেন, মা হেনা বেগম, ছোট দুই বোন সুমি (৫) ও রুমির (৩) মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

উদ্ধারের পর দ্রুত তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গত ৩ মে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি স্পিডবোট শরিয়তপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাছে এসে নোঙর করে রাখা একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ৫ জন।

এফএইচ/এসএস/জিকেএস