ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

দ্বৈত পাসপোর্টধারী প্রায় ১৪ হাজার, তালিকা হাইকোর্টে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২১

দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি বানানো বা কেনা এমন বাংলাদেশি নাগরিক যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট আছে এবং যারা দেশের বিমানবন্দরগুলো দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন তাদের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৩১ জন। এই প্রায় ১৪ হাজারের কাছাকাছি দ্বৈত পাসপোর্টধারী নাগরিকদের তালিকা পুলিশের এসবি ইমিগ্রেশন শাখা থেকে হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (৩১ মার্চ) পুলিশের বিশেষ শাখার সুপারের পক্ষে (ইমিগ্রেশন) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে ১৩ হাজার ৯৩১ দ্বৈত নাগরিকের তালিকাসহ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এই তালিকা এফিডেভিট আকারে আদালতে দাখিল করা হবে বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দীন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের পরে দ্বৈত নাগরিকদের নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর স্বঃপ্রণোদিত হয়ে দেশ থেকে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করে যারা বিদেশে বাড়ি নির্মাণ বা ক্রয় করেছেন তাদের মধ্যে দ্বৈত নাগরিকত্ব বা পাসপোর্টধারীদের এবং যারা দেশের তিনটি (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে-বিদেশে ঘন ঘন আসা-যাওয়া করছেন, তাদের তালিকা চান হাইকোর্ট।

পুলিশের বিশেষ শাখার সুপারকে (ইমিগ্রেশন) এ তালিকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এসব অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চান আদালত।

এর আগে গত ১৮ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিদেশে অর্থ পাচার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, তার কাছে ২৮টি কেস এসেছে। এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে গত ২২ নভেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন।

হাইকোর্ট দেশের বাইরে অর্থপাচারে জড়িত দুর্বৃত্তদের নাম, ঠিকানা ও পাচার করা অর্থে তাদের বিদেশে বাড়ি তৈরিসহ বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৭ ডিসেম্বর বিষয়টি আদালতে শুনানিতে ওঠে। সেদিন আদালত দেশের বাইরে অর্থপাচারে জড়িত ও পাচার করা অর্থে যারা বিদেশে বাড়ি তৈরি করেছেন, তাদের নাম-ঠিকানা ও তাদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানতে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, দুদকসহ বিবাদীদের সময় দেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ওই তালিকা দাখিল করা হয়।

কিন্তু এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর দুদকের পক্ষ থেকে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে তথ্য দাখিল করা হয়। সেখানে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে করা মামলার একটি তালিকা দিলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ‘আমাদের পুরানো কাহিনী শুনিয়ে কোনো লাভ নাই। নতুন কী তথ্য আছে সেট দিন। যারা কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার করে গাড়ি-বাড়ি করেছে তাদের বিচারটা করা না গেলেও নামটাও কি দেশের জনগণ জানতে পারবে না?’ এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট অর্থপাচারকারীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের তালিকা তলব করে আদেশ দেন।

আদালতে ওইদিন দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি।
দুদক আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, এ ধরনের তালিকা পেলে অর্থপাচারকারীদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে।

আদালত বলেন, দ্বৈত নাগরিক ও পাসপোর্টধারী কারা, সেটা আমরাও জানতে চাই। দ্বৈত পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাতায়াতকারীদের তথ্য জানা প্রয়োজন।

এফএইচ/এমআরআর/জিকেএস