ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ক্যাম্পে গোলাম আযম-নিজামীর সঙ্গে মুজাহিদকে দেখা গেছে

প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

ট্রেনিং সেন্টারে (ক্যাম্প) গোলাম আযম ও নিজামীর সঙ্গে মুজাহিদকে দেখা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে  আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।  

তিনি বলেন, মুজাহিদ আলবদর বাহিনীর সদস্যদেরকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। এজন্য তাকে দেয়া আপিল বিভাগের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি সঠিক হয়েছে।  

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে তাকে যে সব সময় হত্যাকাণ্ডের স্থানে থাকতে হবে এরকম কোনো কথা নেই। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুদ্ধাপরাধীদরে বিচার যেগুলো হয়েছে, সেই সব বিচারের কতগুলো নজিরও এই রায়ে তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানেও স্পষ্ট বলা আছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তির যে হত্যাকাণ্ডের স্থানে থাকতে হবে, তাকে সরাসরি হত্যা করতে হবে এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি যদি পরিকল্পনা, উৎসাহিত ও নানারকম সহযোগিতা করেন, তার বক্তৃতায় বা তার লেখায় যদি কেউ উজ্জীবিত হয়ে কেউ হত্যাকাণ্ড ঘটায় তাহলে তিনিও দায়ী হবেন।

এখানে ফৌজদারি মামলায় একটা সময়ে কেউ যদি উল্লেখ নাও করে, ওই সময়ে কেউ যদি নাও জেনে থাকে, পরবর্তী সময়ে যদি ঘটনার সম্পর্কে কোনো এফআইআর হয়, সাক্ষীদের প্রমাণ আসে, লিখিত ও মৌখিক সাক্ষীতে, তাহলে তার বিচার হবে না কেন? আমার পক্ষে তো আমি লম্বাচোড়া কথা বলিনি। যে রায় আপিল বিভাগ দিয়েছেন, তাকে দণ্ড দিয়েছে, একটা চার্জে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, সেটা বহাল থাকবে, এটাই আমার প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা মুজাহিদের রিভিউ পিটিশনের আজকের (মঙ্গলবার) শুনানি সম্পন্ন হয়েছে এবং কাল (বুধবার) এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলাটি আজকে ছিল তালিকায়, তার আইনজীবী কাল এটা শুনানি করবেন এই মর্মে বলায়, সেটা কালকের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে। আশা করি কাল (বুধবার) সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ আবেদনের শুনানি হবে।

এদিকে, মঙ্গলবার নিজামী আপিলের ওপর শুনানি আবার শুরু হয়েছে। মুজাহিদ রিভিউতে তার আইনজীবী যে বক্তব্য দিয়েছে তাদের মোদ্দাকথা হলো তিনি তো নিজে কোন লোককে মেরেছেন বা কোন বুদ্ধিজীবীকে  হত্যা করেছেন-এরকম
তো সাক্ষ্য মামলায় নাই, এ ছিল তাদের মুখ্য বক্তব্য।

সুতরাং তাকে মুত্যুদণ্ড থেকে অন্তত পক্ষে যাবজ্জীবন করা হোক, এই মর্মে তারা আদালতের কাছে বক্তব্য রেখেছেন।

প্রতিউত্তরে আমরা বলেছি তিনি সে সময় ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় যে বক্তব্য রেখেছেন, যেভাবে স্বাধীনতাকামী জনগণকে নিশ্চিন্ন করার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চিন্ন করাতে আহ্বান জানিয়েছেন যে সব বক্তব্য রেখেছেন এবং এর ফলশ্রুতিতে মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে।

বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের যে হেড কোয়ার্টার ছিল মোহাম্মদপুরে ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজ সেখানেও মুজাহিদকে দেখা গেছে। সেখানে মতিউর রহমান নিজামী ও গোলাম আযমকেও দেখা গেছে।

সুতরাং বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে সরাসরি তাকে হত্যা করতে হবে এটা কোনো কথা না, তিনি এই ব্যাপারে প্ল্যান করেছেন, এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন এবং তার যারা সহকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করেছেন-এটাও অপরাধ। এই অপরাধে তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে আপিল বিভাগ থেকে সঠিক ভাবেই শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এই ছিল আমার বক্তব্য।

আইনেরও কোন ব্যত্যয় ছিলনা এবং রিভিউর যে পরিসীমা বা স্কোপ সেই স্কোপের ভেতর তার মামলা পুনর্বিবেচনার কোনো অবকাশ নেই মর্মে বক্তব্য রেখেছি।

মাহবুবে আলম বলেন, এই রায়ে বিভিন্ন বইয়ের উপর নির্ভর করে ওনারা সিদ্ধান্তে এসেছেনে যে আলবদর বাহিনী, পাক-আমির দ্বারা সংঘটিত হলেও কিন্তু এটার লোকাল বা স্থানীয়ভাবে আলবদর বাহিনীর যারা সদস্য ছিল, তাদের যে নেতারা ছিল স্থানীয়ভাবে তারাই এটা পরিচালনা করতো এবং সমস্ত কর্মকাণ্ডে তারা সঙ্গে যুক্ত ছিল।

ওনারা বলেছিলেন, তাকে একটি চার্জে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, যেখানে সরাসরি কোনো সাক্ষ্য নেই-এটা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা সম্বন্ধে। আমি বলেছি, বুদ্ধিজীবীদের ওপর যে আক্রোশ এই জামায়ত ইসলামী বা সেই সময় আল বদর বাহিনীর সেই আক্রোশ আজও কিন্তু শেষ হয়নি। আজও আমরা দেখতে পাই অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মত প্রথিতযশা একজন বুদ্ধিজীবীর ওপরে, হাসান আজিজুল হকের মত প্রখ্যাত লেখক বা গল্পকারের ওপর এখনও হুমকি অব্যাহত আছে এবং তাদের আইনের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দায়ে দণ্ডিত মুজাহিদের দণ্ড যদি কমানো হয় বা মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন করা হয়, তাহলে আমরা সারা দেশবাসী এবং আমরা প্রসিকিউশন হতাশ হব।

রায়ে কোনো অসঙ্গতি নেই। তাদের মোদ্দাকথা একটিই তারা বলতে চেয়েছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ব্যপারে সেখানে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ নিজে কোনো বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছেন এরকম কোনো সাক্ষী নাই।

এফএইচ/এসএইচএস/এএইচ/পিআর