নাইকো দুর্নীতি : খালেদাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে
নাইকো দুর্নীতি মামলায় আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এ সংক্রান্ত রায়ের অনুলিপি (কপি) বিচারিক আদালতে যাওয়ার পর রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ওই দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের রায়েব কপি বিচারিক (বিশেষ জজ আদালত) আদালতে পৌঁছেছে। তাই আদেশ অনুযায়ী ৫ জানুয়ারির মধ্যে খালেদা জিয়াকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে গত ১৮ জুন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, বিচারিক আদালতের রায় প্রাপ্তির দুই মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে সেখানে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ পাওয়ার পর তা গত ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালতে পৌঁছায়। রায়ে নিন্ম (বিচারিক) আদালতকে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন বিবেচনা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রায়ের নির্দেশনার বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশে ফিরলে আত্মসমর্পণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ব্যারিস্টার রাগিফ রাউফ চৌধুরী আরও বলেন, হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আপিল করা হবে।
উল্লেখ্য, কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭শ ৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।
পরে এ মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনে ২০০৮ মালের ৯ জুলাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুল জারি করেন। এ রুলের উপর হাইকোর্টে গত ১৯ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ২৮ মে। এরপর আদালত রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। এরপর ১৮ জুন রুল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সে সময়কার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এদের মধ্যে সেলিম ভুঁইয়া নাইকোর কাছ থেকে কাশেম শরীফের মাধ্যমে তিন কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করেন। সে সময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে নাইকোর কাছ থেকে একটি গাড়ি উপহার নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
এফএইচ/বিএ