ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

মামলাজট না কমলে আস্থা হারাবে জনগণ : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

দেশে ৩০ লাখেরও বেশি মামলা বিচারাধীন রয়েছে, এই মামলাজট না কমলে জনগণ বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের (পিপি) জন্য আয়োজিত ২২তম বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আজ ভার্চুয়াল সিস্টেম যদি না থাকত তাহলে আমাদের সবক্ষেত্রে জীবনযাত্রার পথ বন্ধ হয়ে যেত। আমরা দেখেছি যতক্ষণ পর্যন্ত ভার্চুয়াল কোর্ট অ্যাক্ট না করতে পেরেছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আদালত বন্ধ ছিল। আইনজীবীদের কাজও বন্ধ ছিল। ভার্চুয়াল কোর্ট করার পর ৭২ হাজার মানুষকে রিলিফ দেয়া সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের গর্বের বিষয় এবং আমি আপনাদের জানাতে পারি আমাদের অতিদ্রুত এই যে ভার্চুয়াল কোর্ট করার পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।’

জিপি-পিপিদের উদ্দেশ্য আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অল্পসময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আপনারা ভার্চুয়াল কোর্ট সিস্টেমকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন সেটা আমাদের মুখ সারাবিশ্বে উজ্জ্বল করেছে।’

কৌঁসুলিদের বেতন বাড়াতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে আমি দেখেছি আপনাদের (জিপি, পিপি) যে ভাতা বা ফি দেয়া হয় সেটা অত্যন্ত অপমানজনক, সে জন্য এটা পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। ইনশাআল্লাহ আপনাদের আমরা একটা সম্মানজনক অবস্থানে, যাতে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন সেই রকম ফি’র স্ট্র্যাকচারের ব্যবস্থা আমরা করতে পারব।’

‘সাফল্যের পাশাপাশি আমি মনেকরি অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি ৩০ লাখের বেশি মামলা আমাদের বিচারব্যবস্থায় আটকে আছে। এই ৩০ লাখ মামলা যদি আমরা শেষ করতে না পারি তাহলে এটুকু আমি বলতে পারি, জনগণ বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা সকলে জানেন ‘জাস্টিস ডিলেড, জাস্টিস ডিনাইড’; সেটা এবং বিচারব্যবস্থার ওপর যদি জনগণ আস্থা হারায় এর পরিস্থিতিটা কী হবে সেটা আপনারা সকলে জানেন। আমরা কেউ চাই না সেটা হোক।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার জোর দিয়েছে বিচারব্যবস্থার মধ্যে বিচারপ্রার্থী জনগণ যাতে দ্রুত বিচার পায় সেই রকম ব্যবস্থা করতে হবে। সে জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির দিকে জোর দিতে হবে। বিশ্বে এখন কোর্টের বাইরেই ৯০ শতাংশ ডিসপিউট নিষ্পত্তি হয়। আমাদের সেখানে যেতে হবে। আমরা চাই, সেই জিনিসটাকে আদালতও এনডোর্স করবে।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখানে আমার উল্লেখ করতেই হয়, আজ আমাদের দেশে একটা সত্য জিনিস হয়ে গেছে, সেটা হচ্ছে- যদি কোনো দেওয়ানি মামলা থাকে সেটা মাশাআল্লাহ বাবা শুরু করে...বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান তার বক্তব্যে বলে গেছেন, দাদা শুরু করে বাবা চালায়, ছেলে চালায়, নাতি চালায় তারপরও শেষ হয় না। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। আমরা আর এই অবস্থার মধ্যে থাকতে চাই না। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে যা যা দরকার সেটা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মামলার জট কমিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে সেই পদক্ষেপগুলো আরও কার্যকর করার জন্য আপনারা (জিপি ও পিপি) সচেষ্ট হবেন।’

সরকারি কৌঁসুলিদের দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার প্রতিটি পর্যায়ে সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে আইনানুগভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।’

অনুষ্ঠানে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খন্দকার মুসা খালেদ, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য দেন।

আরএমএম/বিএ/এমএস