ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

সুজন হত্যা : ৯ বছর পর গ্রেফতার দুই আসামি রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২০

রাজধানীর সবুজবাগের মাটির ঠিকাদারি ব্যবসায়ী মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে সুজন (২৬) হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি মো. ফজলু (কুটি) ও আলমগীরের (কালা বাবু) দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পর সোমবার (১০ আগস্ট) রাতে রাজধানীর মুগদা থানার জান্নাতবাগ এলাকা থেকে ফজলুকে গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ টিম। এদিন ফজলুকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। মামলার মূল নথি না থাকায় ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে রিমান্ড শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।

অন্যদিকে আজ কালা বাবুকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই। হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পর বুধবার (১২ আগস্ট) তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই পুলিশ।

২০১১ সালের ১৪ মার্চ বন্ধু ফজলু কুটির সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন সুজন। এর ছয়দিন পর ১৮ মার্চ দুপুরে সবুজবাগ থানার দক্ষিণ রাজারবাগ বাগপাড়া শেষমাথা খালের ময়লা পানিতে কচুরিপানার সাথে ভাসমান অবস্থায় সুজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় ওই দিনই একটি মামলা করেন।

পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) ইউনিট ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ওসমান গণি জানান, মামলাটি প্রথমে সবুজবাগ থানা পুলিশ ও পরে ডিবি কর্তৃক দীর্ঘ প্রায় সাত বছর তদন্তের পর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও অভিযুক্ত পলাতক আসামি আছমা আক্তার ইভা, আরিফুল হক আরিফ ও মো. রানা (বাবু) গ্রেফতার না হওয়ায় এবং পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাবা নারাজির আবেদন করেন। আদালত পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, এর আগে পলাতক আসামি ইভা, আরিফ ও রানাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে আরিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজেকে জড়িয়ে সহযোগীদের নাম উল্লেখ করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

আটক ফজলু জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে জানান, ২০০৮ সালে সুজনের সঙ্গে ইভার বিয়ে হয় এবং ২০০৯ সালে ইভা সুজনকে তালাক দেন। এরপরও সুজন প্রায়ই ইভাকে দেখতে তাদের এলাকায় আসা যাওয়া করতেন। ইভার সঙ্গে সুজনের বিয়ের আগে থেকেই স্থানীয় ফাইজুল ইভাকে পছন্দ করতেন। এ ঘটনায় ফাইজুল, ইভার বড় ভাই আরিফের সঙ্গে সুজনের বিভিন্ন সময় তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। ২০১১ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যার পর আরিফ, ফাইজুল তাদের বন্ধু ফজলু ও কালা বাবু ইভাদের বাসার সামনের মাঠে বসে সুজনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় আরিফ তাদের বাসার পাশের চায়ের দোকান থেকে একটি সাদা পলিথিন ব্যাগ নেন। ফাইজুল ও আরিফ লাঠি নিয়ে স্থানীয় খালপাড় বালুর মাঠের দিকে যেতে থাকেন। এরই মধ্যে ফজলু চলে আসেন। রাত ৮টার সময় ফজলুর সঙ্গে যোগাযোগ করে সুজন খালপাড় বালুর মাঠে আসেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে ফাইজুল সুজনকে পেছন থেকে আটকে ধরেন। আরিফ পকেট থেকে পলিথিন বের করে ফজলুকে দেন। ফজলু পলিথিন নিয়ে সুজনের মাথার উপর থেকে গলায় ঢুকিয়ে প্যাঁচ দিয়ে গিঁট দিয়ে ফেলেন। লাঠি দিয়ে সুজনকে পেটাতে থাকেন আরিফ। পরে কালা বাবু আরিফের হাত থেকে লাঠি নিয়ে সুজনকে পেটাতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর সুজন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সুজন মারা গেছে নিশ্চিত হয়ে তারা মরদেহ পাশের খালেই ফেলে দেন। ফজলু ও কালা বাবু খালের নিচে নেমে সুজনের মরদেহ পানিতে ভাসিয়ে দেন।

জেএ/এমএসএইচ/পিআর