অনির্দিষ্টকালের জন্য ভার্চুয়াল আদালত চলতে পারে না
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রধান বিচারপতির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) রাজধানীর বসুন্ধরায় নিজ বাস ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
খন্দকার মাহবুব বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য ভার্চুয়াল আদালত চলতে পারে না। দেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাভাবিক গতিতে না চলায় বিচার প্রার্থী ও আইনজীবীরা সংকটে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে করোনা মহামারির কারণে গত ২৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর ফলে দেশে বিচার ব্যবস্থায় স্থবিরতা চলে আসে। এই পরিস্থিতিতে গত ১১ মে ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর বিধান আসে, যার আওতায় আইনজীবীরা সংশ্লিষ্ট আদালতে অনলাইনের মাধ্যমে মামলা দাখিলের নির্দেশনা পান।
খন্দকার মাহবুব বলেন, হাইকোর্ট বিভাগে বিভিন্ন ধরনের মামলা পরিচালনার জন্য ১৩টি বেঞ্চ গঠন করা হয়। এসব বেঞ্চে শুধুমাত্র জরুরি মামলা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। করোনা মহামারির আগ থেকে হাইকোর্টের হাজার হাজার মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল এবং প্রতিদিন শত শত নতুন মামলা দায়ের হতো। ফলে আদালতের স্বাভাবিক বিচারকার্য বন্ধ হওয়ার ফলে আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা এক নিদারুণ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, যা কি-না ইতোমধ্যে চরম আকার ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভার্চুয়াল কোর্টে স্বাভাবিক সীমাবদ্ধতার কারণে মামলার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে হতাশাব্যঞ্জক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন শত শত ফৌজদারি মামলাসহ বিভিন্ন মামলা অনলাইনে শুনানির জন্য দাখিল করা হয়। এর কোনো ক্রমিক নম্বর সংশ্লিষ্ট আদালত হতে আইনজীবীদের দেয়া হয় না। ফলে, মামলা শুনানির ক্ষেত্রে তারা এক অজ্ঞাত পরিস্থিতির স্বীকার হন। শোনা গেছে, মামলা দাখিল করার পর আদালতে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ অফিসার তালিকা করে বিচারকের কাছে শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন। বিচারক গুরুত্ব অনুযায়ী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আদালতের দুর্নীতির এক সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারণ মামলা দাখিলের কোনো ক্রমিক নম্বর না থাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সুবিধামতো তালিকা তৈরি করে। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র অর্থ অথবা প্রতিপত্তিই মামলা তালিকা আসা নির্ভর করে।
খন্দকার মাহবুব বলেন, ইতোমধ্যে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অনলাইনে মামলা গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। ওয়েবসাইটে মামলা দাখিলের নিয়ম থাকলেও অজ্ঞাত কারণে, তার কার্যকারিতা বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ভার্চুয়াল কোর্টের আগাম জামিনের কোনো সুযোগ না থাকায় দেশের সর্বত্র প্রতিদিন যে শত শত মামলা দায়ের হয় যার বেশিরভাগই আক্রোশমূলক, সেই সব মামলার আসামিরা গ্রেফতারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঘর ছাড়া হয়।
এফএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ