ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারি : রাশেদ চিশতীর জামিন স্থগিতে অপারগতা
অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) সাবেক পরিচালক রাশেদুল হক চিশতীকে দেয়া চার মামলায় জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে দুদকের করা আপিল শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের স্থগিত চাওয়া সংক্রান্ত দুদকের আবেদনের নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছেন আদালত। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের ভার্চুয়াল চেম্বারজজ আদালত এই অপারগতা প্রকাশ করেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আসামি পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।
এ বিষয়ে দুদক থেকে লিভ টু আপিল আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জাগো নিউজকে বলেছিলেন, মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী মানিলন্ডারিং ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পৃথক পাঁচটি মামলায় বিচারিক আদালত থেকে জামিন নেন। তিনটি মামলায় হাইকোর্টে জামিন বহাল থাকে এবং একটি মামলায় হাইকোর্ট জামিন আদেশ স্থগিত করেন। এই চারটি মামলায় জামিন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে মঙ্গলবার( ১৬ জুন) শুনানির জন্য ধার্য ছিল। আর টাঙ্গাইলের অপর মানিলন্ডারিং মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া জামিন বাতিল চেয়ে দুদকের আবেদনের ওপর সোমবার শুনানি শেষ হয়। আজ মঙ্গলবার বিচারিক আদালতের জামিন আদেশ হাইকোর্টে বহাল রয়েছে।
তবে, এ বিষয়ে দুদক থেকে লিভ টু আপিল আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা (দুদক) জামিন বাতিলে সর্বাত্মক প্রস্তুত আছি।
দুদক আইনজীবী বলেন, অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের অডিট ও ইসি কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী এবং তার ছেলে ব্যাংকের সাবেক শেয়ারহোল্ডার রাশেদুল হক চিশতীসহ পরিবার-স্বজনদের বিরুদ্ধে সতেরো-আঠারোটি মামলা রয়েছে। হাইকোর্টে জামিনের জন্য আসা পাঁচটি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় এখনও চার্জশিট হয়নি, তদন্তাধীন আছে। দুটি মামলা এখন বিচারাধীন।
অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি ও মানিলন্ডারিং মামলায় ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল থেকে বাবুল চিশতী ও রাশেদ চিশতী কারাগারে আছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাবুল চিশতী ও রাশেদ চিশতী ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে কৌশলে প্রায় ১৮শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এসব টাকায় কেনা স্থাবর সম্পদের বাজারমূল্য দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকারও বেশি। আদালতের নির্দেশে এসব সম্পত্তি ইতোমধ্যে জব্দ করা হয়েছে। আসামিরা জামিন পেলে জব্দ করা সম্পত্তি বেহাত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। রাশেদ চিশতীর বিরুদ্ধে থাকা ৫টি মামলাতেই তিনি নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান। ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে তার জামিন হয়।
বিশেষ করে টাঙ্গাইলের মামলায় আদালত দুদকের বক্তব্য না শুনেই রাশেদ চিশতী জামিন দেন। পরে গত ৩ জুন টাঙ্গাইল বিচারিক আদালতের জামিন বাতিল করে ফের আদালতকে জামিন শুনানি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এরপর ১৪ জুন টাঙ্গাইল বিশেষ জজ আদালত পুনরায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। সেই জামিন আদেশ বাতিল চেয়ে সোমবার (১৫ জুন) দুদক পুনরায় ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করে।
এফএইচ/জেডএ/এমএস