ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

মানবতাবিরোধী অপরাধ : ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৭:৩০ এএম, ১১ অক্টোবর ২০১৫

একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতা কক্সবাজারের বিএনপি নেতা সালামত উল্লাহ খানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরামাল চার্জ) দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রোববার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে অপর এক আসামি রশিদ মিয়াকে জামিন দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরামাল চার্জ) দাখিল করার জন্য প্রসিকিউশনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

একইসঙ্গে নতুন এক আসামি মৌলভী রমিজ হাসানকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে ৭১ সংঘটিত হত্যা-গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানান, প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত। তবে মৌলভী রমিজ হাসানকে এই মামলায় ১৯ জনের সঙ্গে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করেননি প্রসিকিউটর।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন রানাদাস গুপ্ত, সঙ্গে ছিলেন তাপস কান্তি বল। অপরদিকে আসামিপক্ষে সালামতুল্লাক খান ও মো. নুরুল ইসলামসহ চারজনের পক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও অপর আসামি রশিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ার হোসাইন।

তার আগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরামাল চার্জ) দাখিল করার জন্য প্রসিকিউশনের পক্ষে দুই মাসের সময় আবেদন করেন রানাদাস গুপ্ত। সময় আবেদনের ওপর শুনানি করে এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

তার আগে গত ৮ অক্টোবর তদন্ত চূড়ান্ত করেছেন তদন্ত সংস্থা। পরে ওই দিনই তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে দাখিল করা হয়। এখন তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তর ও দেশান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী ১৩ টি অভিযোগ রয়েছে।

মামলায় মোট আসামি ২০ জন। এদের একজন মারা যাওয়ায় এখন মোট আসামি ১৯ জন। সালামত উল্লাহ খান ছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- মৌলভী জকরিয়া শিকদার (৭৮), মো. রশিদ মিয়াবিএ (৮৩), অলি আহমদ (৫৮), মো. জালাল উদ্দিন (৬৩), মৌলভী নুরুল ইসলাম(৬১), মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাবুল (৬৩), মমতাজ আহম্মদ (৬০), হাবিবুর রহমান(৭০), মোলভী আমজাদ আলী (৭০), মৌলভী আব্দুল মজিদ (৮৫), বাদশা মিয়া (৭৩), ওসমান গণি (৬১), আব্দুল শুক্কুর(৬৫), মৌলভী সামসুদ্দোহা (৮২), মো. জাকারিয়া (৫৮),  মো. জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী (৫৮), মৌলভী জালাল(৭৫) ও আব্দুল আজিজ (৬৮)।

এদের মধ্যে সালামত উল্লাহ খানসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে মো. রশিদ মিয়া বিএকে জামিন দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ১৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরে সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- সালামত উল্লাহ খান, মো. রশিদ মিয়া বিএ, মৌলভী নুরুল ইসলাম, বাদশা মিয়া, মৌলভী ওসমান গনি, মৌলভী শামসুদ্দোহা, মো. জিন্নাত আলী। তদের মধ্যে মৌলভী সামসুদ্দোহা (৮২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
মৃত্যুবরণ করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. নূরুল ইসলাম ২০১৪ সালের ১২ মে থেকে চলতি বছরের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের অপরাধের তদন্ত শেষ করেন। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে মূল একশত ১১ পৃষ্ঠার সঙ্গে প্রতিবেদনে ৬০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, ঘটনা স্থলের খসড়া মানচিত্র ও সূচি এবং ঘটনাস্থলের স্থির চিত্রসহ সকল নথিপত্র রয়েছে প্রতিবেদনে। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে মোট ঘটনা ১৩টি। এর মধ্যে হত্যার ৯৪টি,  নারী নির্যাতন অসংখ্য এবং লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ব্যাপক। মামলায় মোট একশত ২৬ জন সাক্ষী রয়েছে।

এফএইচ/এসএইচএস/এমএস