রমনার বটমূলে বোমা হামলা : ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য
রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালিউল ইসলাম। তিনি মামলার আসামি আরিফ হোসেন সুমনের জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের কাছে তিনি সাক্ষ্য দেন। এরপর তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এ মামলায় নতুন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত। মামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (বাংলা ১৪০৮ সনের ১ বৈশাখ) রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। ওই ঘটনার পর রমনা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আব্দুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক) ও আরিফ হাসান সুমন। মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল। ৩০২/৩৪ ধারায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে মাওলানা আকবর হোসেন, আব্দুল হান্নান, আরিফ হোসেন, শাহাদাত হোসেন, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া, আবু বকর ও আবু তাহের কারাগারে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত মুফতি আব্দুল হান্নানের ফাঁসি ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে কার্যকর হয়। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে মাওলানা তাজউদ্দিন, শফিকুর রহমান, আবদুল হাই ও জাহাঙ্গীর আলম বদর এখনও পলাতক রয়েছে।
জেএ/এমএফ/এমকেএইচ