গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার আগে তার লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রোববার (২৬ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এই রিট দায়ের করেন।
চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান স্বাস্থ্য সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমাজকল্যাণ সচিবকে এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে গর্ভের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ করতে নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের দেশে এখনও বেশিরভাগ মানুষের ছেলে সন্তানই কাম্য। কারণ তারা মনে করেন, ছেলেরা বংশের ধারক, তারা আয় করে, বেশি শক্তিশালী। এমনকি অনেক নারীও মনে করেন, ছেলে সন্তান ভবিষ্যতে তাদের সুরক্ষা দেবে। এ অবস্থায় যদি পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায় এবং তা মা-বাবার কাঙ্ক্ষিত না হলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, ‘মা যদি হতাশায় ভোগেন তাহলে বাচ্চার মস্তিষ্কের গঠন/বিকাশ ঠিকভাবে হয় না। চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গর্ভে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গর্ভের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ হওয়া জরুরি।’
‘গর্ভবতী মা ও শিশুর কল্যাণের জন্য বা অনাগত সন্তানের সুস্থতা জানতে তারা যেকোনো পরীক্ষা করতেই পারেন। কিন্তু শুধু গর্ভে থাকা সন্তান ছেলে না মেয়ে তা জানার উদ্দেশ্যে ডাক্তারি পরীক্ষা বা ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই এই বিষয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু নোটিশের জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে’-যোগ করেন আইনজীবী।
এফএইচ/এসআর/এমকেএইচ