ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

‘মুজাহিদকে রেহাই দিলে উপহাস করা হবে’

প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে বিজয়ের দ্বার প্রান্তে এসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের যেসব সাক্ষ্য ও দালিলিক প্রমাণ রয়েছে তাতে যদি মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেয়া হয় তবে সেটি হবে বিচার বিভাগের জন্য উপহাসমূলক। তাই আপিল বিভাগ মনে করেন ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির যে রায় দিয়েছে তা অমূলক নয়।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া প্রকাশিত রায়ের পর্যবেক্ষণে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সম্পর্কে এমনটি বলা হয়।

মুজাহিদের ১৯১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে। রায়ে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ আপিল মামলার রায় প্রদানকারী চার বিচারপতি। অন্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, আপিল বিভাগ মনে করেন বিশ্ববাসী কোনো দিন হিরোশিমা-নাগাসাকির ধ্বংসযজ্ঞ ভুলতে পারবে না। রায়ে বলা হয়, জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদ আল বদর বাহিনীর একজন নেতা ছিলেন সেটি এই মামলায় চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনগণের রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ইসলামী ছাত্র সংঘ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজাহিদ ও ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্যরা পাক আর্মির সমর্থন নিয়ে আল বদর বাহিনী গঠন করে গণমানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে এই মাটির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যা করে। এই মামলায় উপস্থাপিত মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য প্রমাণে এটাই প্রমাণিত হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড ছিলো ঠান্ডা মাথায় বর্বর অপরাধ।

মুজাহিদের উস্কানিতে আল বদর বাহিনী যে ধরনের বর্বর ও নিষ্ঠুর অপরাধ সংঘটিত করেছে তাকে হিটলারের গ্যাস চেম্বারের গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করা যায়। রায়ের পর্যবেক্ষণে আপিল বিভাগ বলেন, পুরো বিশ্বই তখন আল বদর বাহিনীর এই বর্বরতা ও গণহত্যা প্রত্যক্ষ করেছে।

এই বুদ্ধিজীবী গণহত্যায় উস্কানি, পরিকল্পনা ও সহায়তা করার জন্য মুজাহিদ দায়ী। এতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে মুজাহিদ একজন যুদ্ধাপরাধী। তাই আপিল বিভাগের অভিমত হলো যে, মুজাহিদ যে অপরাধ করেছেন তা সন্দেহাতীতভাবে ভীতিকর, ঠান্ডা মাথার ঘৃণ্য, নিষ্ঠুর ও বর্বর অপরাধ।

এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের জন্য ট্রাইব্যুনালেরর দেয়া ফাঁসির রায়ের বাইরে গিয়ে সর্বোচ্চ আদালত অন্য কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারে না। তাই অপরাধের গুরুত্ব ও ধরন অনুযায়ী যথাযথ শাস্তি দেয়াই আদালতের দায়িত্ব। এজন্য বুদ্ধিজীবী হত্যার ক্ষেত্রে যেসব সাক্ষ্য ও দালিলিক প্রমাণ রয়েছে তাতে যদি মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেয়া হয় তবে সেটি হবে বিচার বিভাগের জন্য উপহাসমূলক।

এফএইচ/বিএ