অডিও-ভিডিও ফুটেজ সাক্ষ্য হিসেবে আইনে অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি
আধুনিক যুগ শুরুর সাথে সাথে বিশ্ব প্রযুক্তিগত বিবর্তন যেমন প্রত্যক্ষ করেছে তেমনি অপরাধ সংঘটনের অত্যাধুনিক, ডিজিটাল এবং আরো সুসংগঠিত উপায় প্রত্যক্ষ করছে। এটি অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, আমাদের বাংলাদেশে অতি প্রাচীন কালের পদ্ধতিগত আইন বা প্রসিডিওরাল ল’ মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এই আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে না।
বাংলাদেশে ডিজিটাল বা অডিও-ভিডিও সাক্ষ্যের সাক্ষ্যগত মূল্য নির্ধারণে এখনও সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন হয়নি। যাই হোক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৮ এর মতো কিছু স্পেশাল আইন ইতোমধ্যে প্রণীত হয়েছে, যা কিছুটা হলেও স্বস্তির।
বহুল প্রচারিত ও প্রকাশিত খাদিজা হত্যা, বিশ্বজিত হত্যা এবং রিফাত হত্যাকাণ্ডের পর অডিও-ভিডিও সাক্ষ্য বিচারামলে বিচারক নিতে পারবে কি না তা গুরুত্বপূর্ণ আইনগত প্রশ্ন হিসেবে দেখা দেয়। এই ধরনের নতুন সমস্যায় জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রিটেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অপরাধ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটনের ঘটে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীর দ্বারা দৃশ্যের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ করা ভিডিও রেকর্ড টিভি, ইউটিউব ও ইন্টারনেটে প্রকাশ এবং প্রচার হয়েছে।
কয়েকটির আবার অপরাধ সংঘটনের প্রচেষ্টা, অভিপ্রায়ের অডিও রেকর্ডও একইভাবে প্রকাশ ও প্রচার হয়েছে। চাক্ষুষ প্রমাণ- এসব ইলেকট্রনিক ভিডিও এবং অডিও রেকর্ড আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করলে অপরাধীদের দোষী সাব্যস্ত করতে বেগ পেতে হয় না বলে কথা উঠেছে- এসব ইলেকট্রনিক রেকর্ড আদালতে অন্যতম নির্ভরযোগ্য দালিলিক সাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারের আইনের প্রায়োগিক ও প্রক্রিয়াগত সুযোগ নিয়ে। বর্তমানে আলোচিত এই ডিজিটাল অডিও এবং ভিডিও সাক্ষ্য পদ্ধতির বিষয়টি নিয়ে তাই কলম ধরতে হলো।
ডিজিটাল সাক্ষ্য হচ্ছে, সে সব সাক্ষ্য যা ডাটা, ফটোগ্রাফ, অডিও, ভিডিও, ডিভিডি, মেমরি কার্ড, হার্ডডিস্ক, ই-মেইল, টেলিগ্রাম, টেলেস্ক, চিপস ইত্যাদি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে সংরক্ষিত থাকে। বাংলাদেশে বিদ্যমান ফৌজদারি পদ্ধতিগত আইন যেমন- ফৌজদারি কার্যবিধি (সি আর পিসি) ১৮৯৮, সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ সমূহ ডিজিটাল সাক্ষ্য ব্যবহার নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি বাতলে দেয়নি। তবে সেখানে বিচারিক ব্যাখ্যার (জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রিটেশন) অবাধ সুযোগ রেখেছে।
দেশের বিধিবদ্ধ আইন দ্বারা পরিচালিত ট্রাইব্যুনাল ও আদালতে সাক্ষ্য ব্যবহারের রুলস এবং পদ্ধতি বিষয়ে আমাদের দেশে রয়েছে ১৮৭২ সালের অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট। এখানে মূলত দুই ধরনের অ্যাভিডেন্সের কথা আছে। প্রথমত হলো মৌখিক অর্থাৎ সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়ে যা কিছু বর্ণনা করেন, দ্বিতীয়ত হলো ডক্যুমেন্টারি অর্থাৎ আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষণের জন্য যেসব ডক্যুমেন্ট উপস্থাপন করা হয়।
ডক্যুমেন্ট হিসেবে যে পাঁচটি উদাহরণ এ আইনের ধারা-৩ এ দেয়া আছে, তাতে এখনকার এসব ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইলে ধারণকৃত অডিও বা ভিডিও বা অডিও ভিজুয়াল রেকর্ড নেই। থাকার কথাও নয়, ১৮৭০ থেকে ১৮৭২ সাল পর্যন্ত স্যার জেমস ফিটজজেমস স্টিফেনসহ আইনবিদরা যখন সাক্ষ্য আইনটি খসড়া করেছিলেন, তখন এজাতীয় অডিও-ভিডিও রেকর্ড যে ১০০ বা ২০০ বছর পরে কখনও আসতে পারে সে রকম দুরদর্শী হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বা ছিল না।
তাই বলে তারা একেবারে অদূরদর্শী ছিলেন সে কথা বললে অত্যুক্তি হবে। কেননা ডক্যুমেন্টের সংজ্ঞাটি খুঁটিয়ে দেখলে দেখা যায়, তাদের ড্রাফটিং অনুযায়ী ডক্যুমেন্ট হলো স্মারক হিসেবে ধরে রাখার জন্য কোনো অক্ষর, সংখ্যা, চিত্র, চিহ্ন, সংকেত এক কথায় যে কোনো রকম আঁকিবুকির মাধ্যমে কোনো বস্তু বা পদার্থে ফুটিয়ে তোলা কোনো জিনিসপত্র।
‘Document" means any matter expressed or described upon any substance by means of letters, figures or marks, or by more than one of those means, intended to be used, or which may be used, for the purpose of recording that matter’ এসব অক্ষর, সংখ্যা, চিত্র, চিহ্ন, সংকেতের আঁকিবুকি (letters, figures or marks, or by more than one of those means) কলম দিয়ে, না রঙতুলি দিয়ে, না হাতুড়ি বাটল দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে হবে তা নির্দিষ্ট নয়।
এক্ষেত্রে ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হলে আইনের তো কোনো আপত্তি দেখি না। অডিও-ভিডিও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের যে হার্ডডিস্ক, মেমোরি বা চিপে ধরে রাখা ভিডিও বা অডিও ভিজুয়াল রেকর্ডে ১৮৭২ সালের অ্যাভিডেন্স অ্যাক্টের সংজ্ঞায়িত ডক্যুমেন্টের সব উপাদানই দেখছি।
উদাহরণই তো শেষ কথা হতে পারে না। জেনারেল ক্লজেস অ্যাক্ট-এর ৩ (১৬) ধারা এবং পেনাল কোডের ২৯ ধারায় ডিজিটাল সাক্ষ্য আমলে নিতে বৃহৎ অর্থে বিচারককে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
ফেনীর মেয়ে নুসরাত হত্যা, বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষ কোন সাক্ষী খুঁজে না পাওয়া গেলেও সিসি ক্যামেরা ফুটেজ এবং মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও, ভাইরাল হওয়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যে কোনো ঘটনা, কেস মামলায় সাক্ষ্য হিসেবে প্রমাণের বিষয়বস্তু হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এ কারণে বর্তমানে বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনে সাক্ষ্য হিসেবে ইলেকট্রিক ডিভাইসের সাক্ষ্যগত মূল্য অ্যাভিডেন্স অ্যাক্টের-০৩ ধারায় ৫টি ডকুমেন্টের মধ্যে উল্লেখ না থাকায় বিচারের সময় বিচারপ্রার্থী জনগণ তথা ভিকটিম ও তার পরিবার ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া সাধারণ আইনে ভিডিও ফুটেজ সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার নিয়ে মতানৈক্য লক্ষণীয়।
এ কারণে বর্তমান বিদ্যমান আইনে ডিজিটাল সাক্ষ্য প্রমাণাদির বিষয়বস্তু আইন সংশোধন করে অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট যুগোপযোগী করতে হবে।
স্পেশাল ট্রাইব্যুনালসমূহ যথা সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, আইসিটি আইন ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন- এগুলোতে ভিডিও ফুটেজ ব্যবহারের জন্য সরাসরি নির্দেশনা থাকলেও সাধারণ আইনে নেই।
তবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, তার মধ্যে বিশ্বজিত হত্যাসহ চারটি মামলায় ভিডিও ফুটেজ সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহারের নজির পাওয়া যায়।
“Judicial Interpretation” may play a vital role in regard to admissibility o digital evidence. মামলার তদন্তে তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ভিডিও ফুটেজ জব্দ করে ফুটেজ প্রস্তুতকারককে সাক্ষী হিসেবে মান্য করে অভিযোগপত্র বা চার্জশিটের (সিএস) সাথে ভিডিও ফুটেজ জমা দেবেন এবং বিজ্ঞ বিচারিক আদালত বিচার ফাইলে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে ফুটেজ প্রস্তুতকারককে সাক্ষী হিসেবে পরীক্ষা করে ফুটেজ প্রদর্শনী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন।
তবে প্রস্তুতকারককে সাক্ষী হিসেবে পাওয়া না গেলে কিংবা ফুটেজের অথেনটিকেশন নিয়ে প্রশ্ন আসলে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত অভিযোগপত্র Criminal Investigation Department (CID) এর ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে বিজ্ঞজন মতামত (Expert Opinion) তলব করতে পারেন। কোনো বিপরীতধর্মী (contradictory evidence) পাওয়া না গেলে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত ফুটেজকে সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচনায় নিতে পারেন। তাই সাধারণ আইনে ভিডিও ফুটেজকে সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করতে আইনে কোনো বাধা নেই।
বিশ্বজিত হত্যা মামলায় এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয় যে, ভিডিও ফুটেজ অফিশিয়ালি জব্দকৃত আলামত হিসেবে যেটি তদন্তকারী অফিসারের নিকটে হস্তান্তর করা হয়, সেটিকে আদালত স্বপ্রণোদিতভাবে নির্ভরযোগ্য ধরে নিতে পারে। যদি সেই সব সাক্ষ্য বিচারের সময় অন্যান্য মৌখিক সাক্ষ্যের দেয়া ঘটনার সাথে বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে মিলে যায়।
সে ক্ষেত্রে বিচারকের জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রিটেশনে ডিজিটাল সাক্ষ্য আমলে নেওয়ার ক্ষেত্রে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কৌশলগত দিক বিবেচনায় নিতে হয়। উচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায়ের সিদ্ধান্তে ইলেকট্রনিক সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে আলোকপাত করেছেন, যা ৩৭ ডিএলআর ২৭৫ পৃষ্ঠা, ৬৮ ডিএল আর (এডি) ৩৭৩ পৃষ্ঠা এবং ৭০ ডিএলআর (এডি) ২৬ ওই কেসসমূহে আদালত বলেছেন আইন হতে মানুষের কল্যাণে এবং আইন কখনও কঠিন হতে পারে না।
আবার সুপ্রিম কোর্টের সে সিদ্ধান্ত সব তদন্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী, বিচারকের তাৎক্ষণিক অবগতিতে থাকেও না। আমাদের দেশে ১৯৮৫ সালে ৩৭ ডিএলআর ২৭৫ পৃষ্ঠায় হাইকোর্ট বিভাগ সে সময়ের ভিডিও ক্যাসেট ডক্যুমেন্টারি অ্যাভিডেন্স হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলেছেন। তারও আগে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এআইআর ১৯৬৪ এসসি ৭২ পৃষ্ঠায়, এআইআর ১৯৬৮ এসসি ১৪৭ পৃষ্ঠায় এবং পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট পিএলডি ১৯৭৬ এসসি ৫৭ পৃষ্ঠায় টেপ রেকর্ডকে ডক্যুমেন্টারি অ্যাভিডেন্স হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলেছেন।
কিন্তু পরবর্তীকালে এসব সিদ্ধান্ত কাজে লাগাবার নজির খুব একটা পাওয়া যায়নি। তাই সংশ্লিষ্ট আইনের বিধানগুলোই সুস্পষ্ট থাকা কাম্য। সাক্ষ্য আইনের ৪৫ ধারায় বিশেষজ্ঞ মতামত চাওয়ার ব্যাপারে আলোকপাত করার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) ১৮৯৮ এর ১৬৫ এবং ১৬১ ধারায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার প্রয়োজনে নথিতে যে কোনো সাক্ষ্য সংযুক্ত করার ক্ষমতা দিয়েছে। তবে সেটি উপযুক্ত ব্যক্তি বা মাধ্যম দ্বারা প্রমাণ করার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
দালিলিক আর মৌখিক সাক্ষ্যের বাইরে আরেক ধরনের সাক্ষ্যও বিচারকাজে হরহামেশাই ব্যবহার হয়, যেটাকে বলা হয় বস্তুগত বা বাস্তব সাক্ষ্য (Material or Real Evidence), আমাদের আদালত ও ট্রাইব্যুনাল অঙ্গনে যা আলামত নামে অত্যধিক পরিচিত। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৫ ধারার বিধান অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্মতা অপরাধ সংশ্লিষ্ট যে কোনো আলামত জব্দ করতে পারেন, করেন।
আর ১৮৭২ সালের অ্যাভিডেন্স অ্যাক্টের ধারা ৬০ এর ২ নং শর্তাংশের বিধান ও ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারের ১৬১ বিধি অনুযায়ী আদালতে বিচারের সময় আলামত প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। অপরাধকাণ্ড সংশ্লিষ্ট ইলেক্ট্রনিক অডিও বা ভিডিও বা অডিও ভিজ্যুয়াল রেকর্ড আলামত হিসেবে গ্রহণ না করারও কোনো যুক্তি দেখি না।
আমাদের দেশে সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইন হয়েছে ২০০৬ সালে। তখনই আমাদের অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট, পেনাল কোড, ব্যাংকার্স বুকস অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট ইত্যাদি ডিজিটাল যুগোপযোগী করে ফেলার কথা; কিন্তু তা হয়নি। তারও পরে, দীর্ঘ সময় চলে গেছে, চলে যাচ্ছে। ইলেক্ট্রনিক সাক্ষ্য প্রমাণাদি গ্রহণযোগ্যতা ও গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করা জন্য আমাদের আইনগুলোর সংশোধন এখনই প্রয়োজন।
দিন দিন প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে অপরাধ সংঘটনের ধরন, কৌশল ও মাধ্যম যেমন পাল্টেছে তেমনি আইনও যুগোপযোগী করে প্রণয়ন করে সে সব নতুন ধরনের অপরাধের বিচারের ব্যবস্থা করা জরুরি আর সেটি তো যুগের চাহিদা। তা নাহলে অপরাধীরা অপরাধ করে পার পাবে আবার দেখা দেবে বিচারহীনতার সংস্কৃতি।
আইএইচএস/এমএস