টেন্ডারবাজি করে অবৈধ অর্থের মালিক জি কে শামীম
আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম তার সাত দেহরক্ষীর সহযোগিতায় লোকজনকে ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজি করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন। গুলশানের অস্ত্র আইনে মামলায় জিকে শামীমসহ তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে র্যাব যে চার্জশিট দিয়েছে তাতে এসব কথা উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
গুলশানের অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমসহ তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে রোববার চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক। আজ সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী চার্জশিটটি দেখিলাম বলে স্বাক্ষর করেন। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিটে উল্লেখ করেন, মামলার প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আসামি জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক এবং জুয়া ব্যবসায়ী (ক্যাসিনো) হিসেবে পরিচিত। তার সাত দেহরক্ষীদের সহযোগিতায় নিজ নামীয় লাইসেন্সের অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে তিনি। এ অস্ত্রের দ্বারা লোকজনদের ভয়ভীতির সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়া ব্যবসাসহ স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজি করে স্বনামে বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন জি কে শামীম। আসামিরা নিরাপত্তা লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্র-শস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করে অপরাধ করেছে।
এর আগে রোববার (২৭ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক এ চার্জশিট জমা দেন।
জি কে শামীমের সাত দেহরক্ষী হলেন- দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
গত ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার হন জি কে শামীম। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থপাচার আইনে তিনটি মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে শামীমকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়।
গ্রেফতারের পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর অস্ত্র ও মাদক মামলায় পাঁচদিন করে শামীমের মোট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। একইসঙ্গে অস্ত্র আইনের মামলায় তার সাত দেহরক্ষীর চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
২৭ সেপ্টেম্বর অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে জি কে শামীমকে মাদক আইনের মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে করা মামলা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) তদন্ত শুরু করে।
এদিকে গতকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আল মামুন।
এর আগে ২৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর আদালতে তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে আগামী ২৭ অক্টোবর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। এছাড়া ২২ অক্টোবর তাদের দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত তাদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য একই দিন ধার্য করেন।
২১ অক্টোবর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
জেএ/এসএইচএস/জেআইএম