দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত না করায় ধর্ষণ বাড়ছে : হাইকোর্ট
দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারায় ধর্ষণের মতো অপরাধ বাড়ছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ধর্ষণ-সংক্রান্ত মামলায় দুই আসামির জামিন আবেদন খারিজ করে মঙ্গলবার আদালতের লিখিত আদেশ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের বিচারকদের স্বাক্ষরের পর প্রকাশ ওই লিখিত আদেশে এই পর্যবেক্ষণ দেখা গেছে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্ষণ বিশেষত শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার মতো ঘৃণ্য অপরাধ বেড়েই চলেছে। এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধীর দ্রুততম সময়ে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারার দায় মূলত রাষ্ট্রের ওপরই বর্তায়। এক্ষেত্রে বিচার বিভাগও জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।
আদালত লিখিত আদেশে আরও বলেছেন, আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, ধর্ষণ-সংক্রান্ত মামলার আসামিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়া ও ধূর্ত প্রকৃতির। এরা ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের ওপর চাপ-প্রভাব বিস্তার করে আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে ভয়-ভীতি, প্রলোভনসহ বিভিন্ন ধরনের কূটকৌশল অবলম্বন করে। ক্ষেত্র বিশেষে সালিশের নামে সামাজিক বিচার করে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য এবং আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে বিরত থাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে থাকে। এ অবস্থায় সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়নের বিকল্প নেই। আমরা প্রত্যাশা করছি সরকার দ্রুততম সময়ে এ বিষয়ে আইন প্রণয়ন করবে।
আদালত বলেন, দেশের বিভিন্ন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যাসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাসমূহ বিচারের জন্য অপেক্ষমান। এর মধ্যে ৪-৫ বছরের পুরাতন মামলার সংখ্যাও কম নয়। অভিযোগ গঠনে বিলম্ব এবং যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কয়েক মাস পরপর তারিখ পড়ছে। যদিও এই (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন- ২০০০) আইনের ২০(৩) ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, মামলা বিচারের জন্য নথি প্রাপ্তির তারিখ হতে ছয় মাসের মধ্যে বিচার কাজ শেষের পর।
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন নামঞ্জুরের পর আসামি মো. রাহেল ওরফে রায়হান এবং মো. সেকান্দার আলী জামিন বিষয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। কিন্তু আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে পর্যবেক্ষণসহ ওই আদেশ দেন।
এফএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ