বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় এবার বিচার হবে খালেদার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বদলির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (৪ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমান এ আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার রকিবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল। উচ্চ আদালত থেকে খালেদা জিয়া জামিন নিয়েছেন তার আদেশ আমাদের আদালতে এসেছে। মামলাটি এখন বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বদলির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সিএমএমের আদেশে যেকোনো মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটির বিচারকার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।’
এ মামলাটি ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা আরও ১২ মামলার বিচারকার্যক্রম কেরানীগঞ্জে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনের অস্থায়ী আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মামলাগুলো হলো- রাজধানীর দারুসসালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে করা আট মামলা, যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা এক মামলা, মানহানির অভিযোগে করা তিন মামলা।
এর আগে গত ২০ মার্চ মানহানির মামলাটির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম হাকিম জিয়াউর রহমান। গ্রেফতার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশও দেয়া হয় সেদিন। ১৮ জুন হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ হাফিজ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মামলায় খালেদা জিয়ার ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৮ সালের ৩০ জুন দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস। এরপর মামলার বাদী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ায় এ দেশের জনগণ যুদ্ধে নেমেছিল।’
খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতি ও লুটপাট। দলীয় লোকদের জঙ্গি বানিয়ে নিরীহ লোকজনকে হত্যা করছে, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হত্যা করা হচ্ছে। পুলিশ দিয়ে বিরোধী দলসহ ভালো ভালো লোককে গ্রেফতার, গুম ও হত্যা করছে। উন্নয়নের নামে পদ্মা সেতু ও ফ্লাইওভারের কাজ বিলম্ব করে ব্যয়বহুল অর্থ দেখিয়ে লুটপাট করছে। যার বিরুদ্ধে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হুকুম দিচ্ছি, তোমরা প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে নেমে এ সরকারের বিরুদ্ধে সব জনগণ ও যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার ব্যবস্থা কর।’
তার এ বক্তব্যে ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদের আদালতে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শাহবাগ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, দুদকের করা দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া ও সাজা বৃদ্ধির জন্য হাইকোর্টে আপিল আবেদন করে দুদক। উভয় আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজার মেয়াদ ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছরের আদেশ দেন।
এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়। বর্তমানে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন।
জেএ/বিএ/এমএস
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ শিবিরের ৪ নেতাকে হাত ও চোখ বেঁধে গুলি করে পঙ্গু করা হয়
- ২ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ৯ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- ৩ সমাজসেবা অধিদপ্তরের ডিজিকে সরিয়ে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- ৪ যুবদল নেতা হত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে সাংবাদিক শেখ জামাল
- ৫ পঞ্চদশ সংশোধনীর রুলে পক্ষভুক্ত হলেন ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান