হাইকোর্টে এসে জিতল অদিতির ভালোবাসা
ভালোবেসে বিয়ে করায় অপহরণ মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া স্বামী তুষার দাসকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে তুষার দাসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন শিশির মুহাম্মাদ মনির ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন।
স্বামী তুষার দাসকে ছাড়িয়ে কাছে নিতে তিন মাসের শিশু কোলে নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন স্ত্রী সুষ্মিতা দেবনাথ অদিতি।
সুষ্মিতা ও তার আইনজীবী ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, দুই বছর আগে তুষার ও সুষ্মিতা ভালোবেসে বিয়ে করেন। তিন মাস আগে তাদের কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান। কিন্তু তুষার দাস ধর্মীয় বিধানে নিম্নবর্ণের হওয়ায় শুরুতেই এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি সুষ্মিতার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা।
মেয়ে নাবালিকা- এ অভিযোগ তুলে সুষ্মিতার মা তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করেন। মামলায় অপহরণের দায়ে তুষারকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ আ. ছালাম খান। সুষ্মিতা দেবনাথ স্বেচ্ছায় তুষার দাসকে বিয়ে করার কথা বললেও তার কথা আমলে নেননি নিম্ন আদালত।
আদালত ১৪ বছর কারাদণ্ড দিয়ে রায়ে বলেছিলেন, ‘সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামি তুষার দাস রাজ ভিকটিম সুষ্মিতা ওরফে অদিতিকে অপহরণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। আসামি শিশু সুষ্মিতাকে বিয়ে করবেন এ আশ্বাস দিয়ে অপহরণ করেছেন, যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হলো। তবে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে ওই দায় থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
গত ৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তুষার। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তিনি আপিল করেন। এরপর স্বামীকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড থেকে মুক্ত করতে হাইকোর্টে আসেন স্ত্রী সুষ্মিতা দেবনাথ।
সুষ্মিতা দেবনাথ বলেন, ‘আমার একটাই অপরাধ, আমি ব্রাহ্মণ বর্ণের মেয়ে হয়ে হরিজন বর্ণের ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। আইনের মারপ্যাঁচে আমাদের জীবন আজ বিপন্ন।’
এফএইচ/জেডএ/জেআইএম