এমপি রানার জামিন বহাল, মুক্তিতে বাধা নেই
দুই যুবলীগ নেতা হত্যার আলোচিত মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান রানাকে হাইকোর্টের দেয়া অন্তর্বতী জামিনাদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে, এমপি রানার মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী রোশো মোস্তফা।
জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন খারিজ করে সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিষয়ে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। অন্যদিকে, এমপি রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন রোশো মোস্তফা।
এর আগে গত ১৯ জুন হাইকোর্ট এ মামলায় রানাকে স্থায়ী জামিন দেন। জামিনের বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন। এরপর রানার জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল আবেদন করে। সেই আপিলের বিষয়ে সোমবার আপিল বিভাগের নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন মোটরসাইকেলে টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা করলে তদন্ত করে ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে পুলিশ। পরে এ মামলায় গ্রেফতার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন ও হিরন মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যার ঘটনায় আমানুর রহমান খান রানার নাম উঠে আসে।
গ্রেফতাররা আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, ‘রানার নির্দেশেই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়।’
বিচারিক আদালত গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় রানার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে যান। হাইকোর্ট ৬ মার্চ এ মামলায় সাবেক এমপি রানাকে ৬ মাসের জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে গেলে চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ১৪ মার্চ জামিন স্থগিত করে দেন।
পরে ২৩ এপ্রিল আপিল বিভাগও স্থগিতাদেশ বহাল রেখে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সেই ধারাবাহিকতায় রুল শুনানি শেষ করে হাইকোর্ট রানাকে স্থায়ী জামিন দেন।
এর আগে হাইকোর্ট গত ১৪ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক এমপিকে ৬ মাসের জামিন দেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২৫ মার্চ জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগ আবেদনটির শুনানি নিয়ে ১ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দিলে এ মামলায় রানার জামিন বহাল থাকে। এ হত্যা মামলায় রানা আত্মসমর্পণ করলে আদালত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
রানার বিরুদ্ধে মোট দুটি মামলা থাকায় এবং দুটি মামলাতেই আপিল বিভাগে জামিন বহাল থাকায় এখন এমপি রানার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
এফএইচ/এসআর/পিআর