সুপ্রিম কোর্টে ‘মহিষকাণ্ড’
সোমবার দুপুর ১টা। সুপ্রিম কোর্টের গেট দিয়ে হঠাৎ ঢুকে পড়ে একটি মহিষ। এদিক- ওদিক ছুটোছুটি। একে ওকে ধাওয়া দিচ্ছে। নিয়ন লাইট ভাঙছে। মৎস্য ভবনের দিক থেকে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশ করার গেটে তখন ‘মহিষকাণ্ড’ দেখতে শত শত মানুষের ভিড়।
কিছুক্ষণ ছুটোছুটি করার পর সুপ্রিম কোর্টের বাগানে ঘাসের মধ্যে কিছুক্ষণ সতর্কভাবে দাঁড়ায় মহিষটি। কেউ সামনে এলেই তাকে ধাওয়া দিচ্ছিল।
কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা। দড়ি নিয়ে মহিষের পেছনে ছুটোছুটি করলেও বশে আনতে ব্যর্থ হন তারা।
এরপর প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক চিকিৎসক দূর থেকে মহিষটিকে আলতোভাবে ধরে ইনজেকশন পুশ করেন। মুহূর্তেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মহিষটি। অজ্ঞান অবস্থায় দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। তবে ঘণ্টাখানেক হলেও জ্ঞান ফিরছিল না। এবার উদ্বিগ্ন সবাই। মাথার নিচে একটি বস্তা দিয়ে বালিশের মতো ব্যবস্থা করা হয়। চোখে মুখে ঢালা হয় পানি। ঘণ্টাখানেক পর জ্ঞান ফেরে মহিষটির।
কিন্তু বেঁধে ফেলার আগেই সুপ্রিম কোর্ট এলাকার গাছ ও নিয়ন বাতি ভেঙে ফেলে মহিষটি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ইব্রাহিম খলিল জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কয়েকজন পাশ থেকে ছবি তোলার সময় মহিষটি তীব্র গতিতে আমার দিকে ছুটে আসছিল। আশপাশের মানুষ ছুটে নিরাপদ দূরত্বে সরে যায়। আমি সামনের গাছটার আড়ালে গেলাম, আমার গা ঘেঁষে মহিষটা ছুটে গিয়ে আছড়ে পড়লো পাশে ইটের পথটাতে। তার গতি এতো বেশি ছিল যে পিচ্ছিল ইটের রাস্তায় সে স্লিপ করলো। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম।
ফায়ার সার্ভিস সদর দফতর কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে মহিষটি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, মহিষটি নিয়ন্ত্রণে প্রাণিসম্পদ বিভাগসহ সবাইকে খুব বেগ পেতে হয়েছে। মহিষটি স্বাভাবিক হওয়ার পর হাইকোর্ট এবং প্রাণিসম্পদ বিভাগ বিকেলে তার মালিকের কাছে হস্তান্তর করে।
এফএইচ/এআর/এসএইচএস/এমএস