ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

জিয়ার শাসনামলের ট্রাইব্যুনালের বৈধতার রিট শুনানি আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:১৪ এএম, ২৪ জুন ২০১৯

প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিমানবাহিনীর এক বিদ্রোহের ঘটনায় ট্রাইব্যুনাল গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও সামরিক আদালতের দেয়া দণ্ডের ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা একটি রিট আবেদন শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের তালিকায় রয়েছে।

এ বিষয়ে আজ শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

রিট দায়েরের পর এর আগে গত ৬ মে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানির জন্য আজকের এই দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী রিটের শুনানি আজ হবে বলে জানান রিটকারীর পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।

রিট দায়েরকারী আইনজীবী মতিউর রহমান জানান, গত ৫ মে রিট আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। পরের দিন ৬ মে রিটের শুনারি জন্য তালিকায় ছিল। কিন্তু সেদিন আদালত ২৪ জুন রিটের শুনানি করবেন বলে ঠিক করেন। সে অনুযায়ী আজ রিটটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮৮টি পরিবারের সদস্যদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সামরিক আইনে সেনা সদস্যদের বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ এবং ফাঁসি দিয়ে লাশ কোথায় রাখা হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়।

রিট দায়েরের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান জানিয়েছিলেন, ওই ঘটনায় সে সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না, রিটে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সামরিক আইনে সেনা সদস্যদের বিচার ও লাশ গুমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। রিটে সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

আইনজীবী আরও জানান, বিমানবাহিনীর এক বিদ্রোহের ঘটনায় ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর জিয়ার অবৈধ সামরিক আদালতে দণ্ড ও সাজাপ্রাপ্তদের চাকরির স্বাভাবিক অবসর পর্যন্ত বকেয়া বেতন, অন্যান্য সব সুবিধা, পেনশনসহ ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটটি করা হয়েছে। জেনারেল জিয়াউর রহমানের অবৈধ মার্শাল ল’ ট্রাইব্যুনাল আইন-১৯৭৭ এর অধীনে সামরিক আদালতে দণ্ড এবং সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সেই দণ্ডাদেশের সময় থেকে চাকরির স্বাভাবিক অবসরের সময় পর্যন্ত পদ-পদবি অনুযায়ী, তাদের চাকরির সমস্ত বকেয়া বেতন ও অন্যান্য সব সুবিধাসহ পেনশন না দেয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা অনুযায়ী কেন সরকারি চাকরি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না, মর্মে রুলে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।

রিট আবেদনে যুক্ত করা একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ভোররাতে বিমানবাহিনীতে ভয়াবহ এক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। কঠোরভাবে সেই বিদ্রোহ দমন এবং সামরিক আদালতে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেয়া হয় ১১ জন অফিসারসহ ১ হাজার ৪৫০ জন বিমান সেনাকে। বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হন বিমান বাহিনীর আরও ৪ হাজার সদস্য। এ ছাড়া অসংখ্য সদস্য নিখোঁজ হন।

সেই বিদ্রোহের পুনঃতদন্ত দাবি করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন বিমানবাহিনী বিদ্রোহের ঘটনার শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

তাদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত ওই খবরে বলা হয়, ১৯৭৭ এর বিমানবাহিনী বিদ্রোহের পর অন্যায়ভাবে অনেক বিমানসেনাকে ফাঁসি দেয়া হয়। তাদের অনেকের লাশও পাননি পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া ওই ঘটনার পর অনেকের সন্ধান মেলেনি। আজও বিচার হয়নি সেই ঘটনার, কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি পরিবারগুলো। তারা সেই ঘটনা পুনঃতদন্ত করে দেখার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।

রিটকারীদের আইনজীবী মতিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্শাল ল’ রেগুলেশন অ্যাক্ট ১৯৭৭ দ্বারা সামরিক আদালতে জিয়াউর রহমান অন্যায়ভাবে বিচার করেছিল। সেই বিচারে যাদের ফাঁসি হয়েছিল, যাদের যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছিল। যারা চাকরিচ্যুত হয়েছিল সেসব ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনার জন্য এই রিট আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে, বেআইনিভাবে যাদের সাজা দেয়া হয়েছিল তাদের যেন মাফ করে দেয়া হয় এবং যারা মারা গেছেন তাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পোষ্যদের যাতে সরকারি চাকরিতে অ্যাকোমোডেট করা হয়, সেই বিষয়টি রিটে আবেদন জানানো হয়েছে।

এফএইচ/জেডএ/পিআর

আরও পড়ুন