ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

নামিদামি ব্র্যান্ডের ভেজাল পণ্য নিয়ে হতাশ হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ০৯ মে ২০১৯

দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্যে ভেজাল পাওয়া যাচ্ছে এমন খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ‘যে সকল নামকরা প্রতিষ্ঠান বিদেশে পণ্য রফতানি করে, আমরা যাদের নিয়ে প্রাউড ফিল করি অথচ তারা আমাদের ভেজাল খাওয়ায়!’

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি নিম্নমানের পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার এবং জব্দ করার নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে করা রিটের শুনানিতে এমন হতাশা প্রকাশ করেন আদালত।

পরে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানহীন ৫২টি পণ্যের তদারকি করে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং তারা কী কী বিষয়ে কাজ করেন এর ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালকের নিচে নয়- এমন দু’জন কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত। আগামী ১২ মে (রোববার) তাদের দু’জনকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের ওপর শুনানিতে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সংগঠনের আইন উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান।

এ সময় উষ্মা প্রকাশ করে দেশের কয়েকটি শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নাম বলেন আদালত। আদালতে বলেন, দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের পণ্য বিদেশ রফতানি হচ্ছে, আমরা তাদের নিয়ে প্রাউড ফিল করি। অথচ তারাই আমাদের ভেজাল খাওয়ায়!

এ সময় আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আজ লিখিত কোনো আদেশ দিচ্ছি না, আপনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দু’জনকে আসতে বলেন, আমরা দেখবো তারা কে কোন বিষয়ে কাজ করছেন।

আদালত আরো বলেন, ভেজাল পণ্য নিয়ে কাজ করা সরকারের কাজ। আমরা আদালত মামলা পরিচালনা করবো। তারপরও প্রত্যেক সপ্তাহে একটার পর একটা ভেজাল নিয়ে আদালতের কাছে আসলে আমরা কী করবো?

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কর্তৃক ৫২টি পণ্য মানহীন উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার পরও এসব পণ্যে উৎপাদকারী কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নোটিশ ছাড়া কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিট করেন ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস)। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদেশের জন্য আাগমী রোববার ১২ মে দিন ঠিক করে আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় করা রিটে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় ৫২টি প্রতিষ্ঠানের মানহীন ও নিম্নমানের পণ্য জব্দ এবং এসব পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পণ্যের গুণগত মান উন্নত না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।

ওইসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট পণ্যসমূহ কেন জব্দ করা হবে না বা বাজার থেকে কেন প্রত্যাহার করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।

রিটের বিবাদীরা হলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক।

এর আগে ৬ মে বিএসটিআই কর্তৃক বাজারে এসব পণ্যে ভেজাল ধরা পড়ার পরও জব্দ না করা, সেগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা না নেয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দুই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও তিন প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে আইনি নোটিশ পাঠায় ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)। নোটিশের পরও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ রিট আবেদন করা হয়।

গত ৩ মে ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের এই রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।

আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান জানান, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় প্রমাণিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য জব্দ করতে নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। এসব পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার ও উৎপাদন বন্ধের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।

এফএইচ/এসএইচএস/পিআর

আরও পড়ুন