ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন না হওয়ায় হাইকোর্টের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১৩ পিএম, ০৬ মে ২০১৯

আদালতের রায়ের পরেও সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনে সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় হাইকোর্ট হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকে এগিয়ে। কিন্তু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনে অবহেলার বিষয়টি হতাশাজনক।’

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি আগামী এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করে আদেশ দিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে কমিটি গঠন করা হয়েছে কিনা, তার তালিকা চেয়ে রিট করা হয়। রিটে দুই সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট তালিকা প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিসহ ছয়টি সংগঠনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ রিট করেন। তিনি জানান, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নির্দেশনা সংবলিত হাইকোর্টের ২০০৯ সালের রায়ের আলোকে কোনো আইন না হওয়া পর্যন্ত এ রায়টি (২০০৯ সালের) আইন হিসেবে মানতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আবেদন জানিয়েছি।

এছাড়া রিটে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি ও আইন মন্ত্রণালয়কে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট ২১জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কর্মস্থল এবং শিক্ষাঙ্গণে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য দিক-নির্দেশনা চেয়ে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।

ওই রিট নিষ্পত্তি করে ২০০৯ সালের ১৫ মে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞাসহ যৌন হয়রানি রোধে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়ে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ কেন্দ্র গঠন এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ না করার কথাও বলা হয়।

রায়ে বলা হয়, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। এ অভিযোগ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে আর কমিটির প্রধান হবেন একজন নারী। এ ছাড়া কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সদস্য থাকবেন। কমিটি যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠাবেন। এরপর দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধের ধরন ও মাত্রা বুঝে বিচার বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিটি নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং পুলিশের কাছে অপরাধীকে না পাঠানো পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। যতদিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদে যৌন হয়রানি রোধে কোনো আইন প্রণয়ন করা না হয়, ততদিন বাংলাদেশ সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের দেয়া এ নীতিমালা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।

এফএইচ/এমএসএইচ/পিআর

আরও পড়ুন