চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা : আপিল শুনানি ৩০ এপ্রিল
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিল গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী (৩০ এপ্রিল) মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই দিন ঠিক করেন। পরে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আপিলটি আজকে অ্যাডমিশন হিয়ারিংয়ের জন্য গিয়েছি। এটা আগামী মঙ্গলবার অ্যাডমিশন হিয়ারিং হবে। বিধান হচ্ছে অ্যাডমিশনের সঙ্গে সঙ্গে বেইল পিটিশন দিতে হয়। আমরা ইতোমধ্যে বেইল পিটিশন রেডি করেছি। আমরা আশা করি ওইদিন অ্যাডমিশনের সঙ্গে সঙ্গে বেইল আবেদন করব।’
এর আগে, গত ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল আবেদন করা হয়। আজ সেটি শুনানির জন্য উঠে। গত ২৯ অক্টোবর পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
একই সঙ্গে, তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই ধরনের সাজার রায় ঘোষণা করা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামির বিরুদ্ধেও।
খালেদা জিয়ার পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিনজন আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচবছর কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। অন্যদিকে, হারিছ চৌধুরী পলাতক রয়েছেন।
অপর দুই আসামি দীর্ঘদিন জামিনে থাকলেও সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মুন্না ও মনিরুলকেও কারাগারে পাঠানো হয়। চারজনের বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণার পাশাপাশি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকায় খালেদা জিয়ার নামে কাকরাইলে কেনা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুদক।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
তবে, শুনানি চলাকালে খালেদা জিয়া একাধিকবার আদালতে হাজির হতে অনিচ্ছা দেখান। সবশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বরও তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন বিচারক, একই সঙ্গে, খালেদার অনুপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম চলবে বলে আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আবেদন করলে ১৪ অক্টোবর সেটি খারিজ হয়ে যায়।
হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া। পরে ২৯ অক্টোবর তাকে ৭ বছরের দণ্ড দেন বিচারিক আদালত। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। এর পর থেকে খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়।
এফএইচ/এমআরএম/পিআর