প্রধানমন্ত্রী মনিটরিং করছেন তদন্তও হচ্ছে, হস্তক্ষেপ করতে চাই না
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সঠিক পথেই আছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ মামলায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেন, ‘আমরা তো এই হত্যা মামলার তদন্তে সরকারের অবহেলা দেখছি না। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এ মামলার মনিটরিং করছেন। সেই সঙ্গে পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্তও সঠিকভাবে হচ্ছে। কাজেই এ অবস্থায় তাদের কাজে কোনো ব্যাঘাত যেন না ঘটে তাই হস্তক্ষেপ করতে চাই না।’
আজ মঙ্গলবার নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিট আবেদনের শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দকে উদ্দেশ করে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
রিট আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ২৮ এপ্রিল দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল রিট আবেদনটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় থাকলেও ওইদিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।
এর আগে ১৭ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
তিনি জানান, রিটে নুসরাত হত্যা মামলায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনার পাশাপাশি ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার করা, তার পরিবারকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) বাদ দিয়ে মামলার তদন্ত র্যাবের কাছে দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
একই সঙ্গে, রিটে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা, নারায়ণগঞ্জের ত্বকি, কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু এবং পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অগ্রগতিও আদালতকে জানানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি ও সোনাগাজীর ওসিসহ মোট পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। সেখানে ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
১০ এপ্রিল দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অগ্নিদগ্ধ নুসরাত।
পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এফএইচ/এসআর/এমএস