বাগেরহাটের স্কুল ছাত্র হত্যা : হাইকোর্টে দুই আসামি খালাস
প্রায় দুই যুগ আগে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার স্কুলছাত্র বাদল হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, (নিম্ন) বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামির করা আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামি মনিরুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ রেজাউল কবির খান। পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাবুল।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে হাইকোর্টের রায়ে। তবে, যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আসামিপক্ষের আইনজীবী রেজাউল কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার প্রথম অভিযোগপত্রে আমার মক্কেল মনিরুজ্জামান ও যাবজ্জীবন পাওয়া আলী আকবর হাওলাদারের নাম ছিল না। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে তাদের নাম যুক্ত করা হলেও কী কারণে তাদের নাম যুক্ত করা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রমাণযোগ্য কোনো কারণ হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায়ে খুঁজে পায়নি। তাছাড়া এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষীদের একটি কথাও নেই। এসব দিক বিবেচনায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।’
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহর বুনিয়া গ্রামে ১৯৯৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে আসামি ফুল মিয়া হাওলাদারসহ দুই-তিনজন দুর্বৃত্ত প্রতিবেশী এলাল উদ্দিনের বাড়িতে যান। এ সময় আসামি ফুল মিয়া এলাল উদ্দিনের স্কুলপড়ুয়া ছেলে বাদলের ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন।
আসামি ফুল মিয়ার সঙ্গে এলাল উদ্দিনের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার দিন বিকেলে এলাল উদ্দিন বাদি হয়ে ফুল মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মোরেলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
২০০১ সালের ১৯ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ফুল মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে মামলার বিচার শেষে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করে আদালত।
নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশের অনুমোদনের আবেদন) হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে যাবজ্জীবন পাওয়া মনিরুজ্জামান ফৌজদারি আপিল করেন। তার ওপর শুনানি শেষ হলে আজ বৃহস্পতিবার রায় দিল হাইকোর্ট।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ এস এম সোলায়মান জেলার মোরেলঞ্জ উপজেলার বহর বুনিয়া গ্রামের মতু হাওলাদারের ছেলে ফুল মিয়া হাওলাদার ও একই গ্রামের মফেজ মল্লিকের ছেলে শহিদুল মল্লিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে যাবজ্জীবন পান বহর বুনিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে মনিরুজ্জামান ওরফে মনিরুল হাওলাদার ও মৃত আবদুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে আলী আকবর হাওলাদার। মামলার চার আসামির মধ্যে মনিরুজ্জামান বাদে বাকি তিন আসামিই পলাতক।
এফএইচ/এসআর/পিআর