জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে ‘উত্তরা গণভবন’কেন নয়?
বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘উত্তরা গণভবন’কে জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে কেন ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে উত্তরা গণভবনের কাঠামোগত পরিবর্তন-পরিমার্জন ও ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর নামে উত্তরা গণভবনের মূল নকশা পরিবর্তন করে প্রকল্পের সাইন বোর্ড টাঙানো এবং নতুন স্থাপনা নির্মাণ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
অপর এক রুলে সংস্কারের নামে ঐতিহাসিক এ স্থাপনা ধ্বংস করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এসব আদেশের বিষয়টি আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে গণপূর্ত ও পর্যটন সচিব, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক, নাটোর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে নাটোরের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারির নির্দেশ দেন।
আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল নিজেই। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাসার।
গত ১০ মার্চ পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর নামে উত্তরা গণভবনের মূল নকশার পরিবর্তন করে নতুন স্থাপনা নির্মাণ উদ্যোগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে উত্তরা গণভবনের ঐতিহ্য রক্ষায় নতুন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ স্থগিত চাওয়ার পাশাপাশি গণভবনের ভেতরে ও বাইরে টাঙানো এ প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড অপসারণ চাওয়া হয়। এছাড়া উত্তরা গণভবনকে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হিসেবে ঘোষণার নির্দেশনাও চাওয়া হয় রিটে।
আইনজীবী ফারজানা শারমিন পুতুল বলেন, গত ৭ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘উত্তরা গণভবন : ঐতিহ্যে কুঠারাঘাত’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদন দায়ের করা হয়।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাঞ্চলীয় বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবনকে আরও বেশি পর্যটক আকর্ষণীয় করার নামে ভেতর ও বাইরে নতুন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ কাজের জন্যপ্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে গণভবনের ভেতরে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি থ্রিডি সিনেপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি পাস না হলেও রাজশাহীর এক ব্যক্তিকে আংশিক কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড গণভবনের ভেতর ও বাইরে টাঙানো হয়েছে।
এফএইচ/এমএআর/আরআইপি