ভিক্টিম অসুস্থ : জেরা হয়নি বনানীর ধর্ষণ মামলার
রাজধানীর বনানীর আলোচিত ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই ছাত্রী ধর্ষণের মামলার ভিক্টিমের জেরার জন্য আগামী ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাদেম উল কায়েসের আদালতে মামলাটির ভিক্টিমের জেরার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ভিক্টিম অসুস্থ থাকায় এদিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত না হওয়ায় সময়ের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৮ মার্চ ভিক্টিমের জেরার জন্য দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের জামিন বাতিল করেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ওইদিন আদালতে সাফাত আহমেদের উপস্থিতিতে বিচারক তার জামিন আবেদন বাতিল করেন। এ ছাড়া কারাগারে থাকা একই মামলার আসামি সাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফের জামিন আবেদনও নামঞ্জুর করেন। অপরদিকে, মামলার ভিক্টিমকে জেরা করার দিনও সেদিন ধার্য ছিল। আদালতে ভিক্টিমকে জেরা করে আসামিপক্ষের আইনজীবী। তবে জেরা করা শেষ না হওয়ায় ৬ মার্চ তথা আজ পরবর্তী জেরার জন্য নতুন করে দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ২৯ নভেম্বর সাফাত আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেন একই বিচারক। এর আগে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের সহযোগী আসামি সাফাত আহমেদের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং বন্ধু সাদমান সাকিব হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
ওই দুই ছাত্রী ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের জামিন বাতিলের আবেদন গত ১৫ জানুয়ারি করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত আদেশের জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন।
ওইদিন ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাদেম উল কায়েসের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু তার জামিন বাতিলের আবেদন করেন। অন্যদিকে সাফাতের আইনজীবী তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন।
বাতিলের আবেদনে তিনি বলেন, আসামি সাফাতের অসুস্থতা বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু আসামি যে এখনও অসুস্থ, তার কোনো সার্টিফিকেট দাখিল করা হয়নি। তাকে দেখেও অসুস্থ মনে হয় না। তাই তার জামিন বাতিল করা প্রয়োজন। জামিন বাতিল না হলে তিনি সাক্ষীদের ভয়ভীতি ও প্রভাবিত করতে পারেন।
বর্তমানে কারাগারে থাকা সাফাত আহমেদের বন্ধু আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী। গত ২৯ নভেম্বর সাফাত আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেন একই বিচারক।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টির কথা বলে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়।
ওই ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর ৬ মে সন্ধ্যায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করে বনানী থানায় ধর্ষণের মামলা করেন এক ভুক্তভোগী।
এরপর ওই বছরের ৮ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম দেলোয়ার হোসেনের আদালতে সাফাতসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি। অভিযোগপত্রে ৪৭ জনকে সাক্ষী করা হয়।
একই বছরের ১৩ জুলাই ঢাকার দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আসামি সাফাত ও নাঈমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ধারা এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ৯ (১) এর ৩০ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
জেএ/জেডএ/পিআর