নিমতলী ট্র্যাজেডি : সুপারিশ বাস্তবায়নে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়
২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বে-আইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের দুজন আইনজীবী নূর মোহাম্মদ আযমি ও খন্দকার এম এস কাওসারের দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে এই রুল জারি করেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব; আইন সচিব; স্বরাষ্ট্র সচিব; শিল্প সচিব; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সচিব; বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ইউনুছ আলী আকন্দ, ব্যারিস্টার মো. রিয়াজ উদ্দিন ও অমিত দাশগুপ্ত। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নূর মোহাম্মদ আযমি ও খন্দকার এম এস কাওসার এবং সাগুফতা তাবাসসুম।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, দুই আইনজীবীর রিটে শুধু ১৭ দফার বাস্তবায়নের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেছেন। বাকি তিনটি রিট চার সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ড ওভার (মুলতবি) রেখেছেন। এছাড়া আদালত অন্তর্বর্তীকালীনভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় যেন ক্ষতিগ্রস্তদের ৫ লাখ টাকা করে দেয় সে আদেশ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ওনার জানা মতে এক লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের এ মনোভাব (৫ লাখ টাকা করে দেয়ার) সরকারকে জানাবেন।
২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৬৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও অনেকে। এখানকার নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশন ঘিরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের পর নতুন করে আলোচনায় আসে ৯ বছর আগে পুরান ঢাকাতেই ঘটে যাওয়া নিমতলী ট্র্যাজেডির কথা। ২০১০ সালের ৩ জুনের ওই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেছিল ১২৪ জনের।
চুড়িহাট্টার ঘটনায় এ ঘটনায় হাইকোর্টে ৫টি রিট আবেদন করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত/ক্ষতিগ্রস্তের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ, নিমতলীর ট্রাজেডির পর তদন্ত কমিটির করা ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নূর মোহাম্মদ আযমি ও খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার, আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং বংশালের বাসিন্দা মো. জাবেদ মিয়া কেমিক্যাল গোডাউন ও কারখানা এবং ব্যবসার উদ্দেশ্যে মজুদ করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণ নিয় রিট করেন। এ চারটি রিট ছাড়াও একটি আবেদন করে কয়েকটি সংগঠন।
২০১০ সালে রাজধানীর নিমতলী ট্রাজেডির তদন্ত কমিটির ১৭ দফা বাস্তবায়ন চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সহ কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়। এজন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় হতাহতের ঘটনায় পুরান ঢাকায় আর যেন রাসায়নিক ব্যবসার অনুমোদন দেয়া না হয় তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আবেদন করা হয়। এ আবেদনের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
এফএইচ/এনএফ/এমবিআর/পিআর/জেআইএম
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ গুলশানে গুলির ঘটনা ঘটেনি, ফুটেজ দেখার অনুরোধ সাবেক ওসি মাজহারের
- ২ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
- ৩ ‘জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট কিলিং করা হচ্ছে’
- ৪ বেনজীর ও মতিউর পরিবারের বিরুদ্ধে ৬ মামলার প্রতিবেদন ১১ মার্চ
- ৫ আদালত-বিচারকের নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা, জানতে চেয়ে চিঠি