ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

জুলহাজ-তনয় হত্যার কথা স্বীকার আসাদুল্লাহর

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৯

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার আসামি আসাদুল্লাহ।

বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) দুই দফা রিমান্ড শেষে আসাদুল্লাহকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে ২০ জানুয়ারি তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ফের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দিদার হোসেন ফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

১৬ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের মঞ্জুর করেন। ১৫ জানুয়ারি রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

মামলার তদন্ত সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু তনয়কে হত্যার পর এর দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল-ইসলাম। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় কাউন্টার টেররিজম (সিটি) বিভাগ। তদন্তে ওই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হতে থাকে। বিভিন্ন পর্যায়ে ওই হত্যাকাণ্ডে ১৩ জন সম্পৃক্ত ছিল। এর মধ্যে আসাদুল্লাহ ছিল অন্যতম।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ তদন্ত ও গ্রেফতারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়েছি যে, হত্যাকাণ্ডের দিন ঘটনাস্থলে ছিল সাতজন। যার মধ্যে পাঁচজন ছিল কিলার গ্রুপের, বাকি দুজন ছিল ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের।’

মনিরুল আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ওই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কিলার গ্রুপের দুজন হলো- আসাদুল্লাহ এবং আগে গ্রেফতার আরাফাত। এ ছাড়া যাবের ওরফে জুবায়ের ও সায়মন হলো ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের ।’

আসাদুল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আনসার আল-ইসলামের সামরিক শাখার দাওরা প্রশিক্ষক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করতো আসাদুল্লাহ। আনসার আল-ইসলামে যোগদানের আগে তিনি যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের কর্মী ছিলেন। আসাদুল্লাহ বাড্ডা, আশকোনা, গাজীপুরের বিভিন্ন আস্তানায় বাসা ভাড়া নেয়ার পদ্ধতি, নিরাপত্তার বিষয়, ডে-অ্যাম্বুশ, সম্মানজনক মৃত্যু, চাপাতি চালানো, পিস্তল চালানো, টার্গেট ব্যক্তিকে হত্যা করার এলাকা রেকি করা এবং হত্যার সময় ও স্থান নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পর্কে সামরিক ট্রেনিং গ্রহণ করে। ২০১৬ সালে উত্তর বাড্ডার সাতারকুলে পুলিশের ওপর হামলা করে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছিলেন আসাদুল্লাহ।’

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগান লেক সার্কাস রোডের এক বাসায় ঢুকে ইউএসএআইডি কর্মকর্তা, সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার রাতেই জুলহাজের ভাই মিনহাজ মান্নানের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করা হয়।

জুলহাজ মান্নান সমকামীদের অধিকার নিয়েও কাজ করতেন। তিনি সমকামীদের নিয়ে প্রকাশিত সাময়িকী ‘রূপবান’এর সম্পাদকও ছিলেন। মাহবুব রাব্বী তনয় ছিলেন লোকনাট্য দলের কর্মী। পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’হিসেবে তিনি কাজ করতেন।

জেএ/এনডিএস/পিআর

আরও পড়ুন