মুক্তিযোদ্ধারা যদি তাদের প্রাপ্য পান, আপনাদের সমস্যা কী?
মুক্তিযোদ্ধারা হলেন সবার উপরে, ওনারা যদি তাদের প্রাপ্য পান, তা হলে আপনাদের সমস্যা কী?
বৃহস্পতিবার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের শুনানির সময় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আইনজীবীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
পরে, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিউ (পুনর্বিবেচনার) আবেদন খরিজ করেন আপিল বিভাগ। ফলে, রিটকারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেতে আর কোনো বাধা রইল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সরকার তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা।
মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে বৃহস্পতিবার রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া। তাদের সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সরকার তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষে ছিলেন বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট জে কে পাল।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদন খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন। তখন এসকে সিনহা ছাড়া বেঞ্চের অপর সদস্যরা ছিলেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
এরপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। আজ ওই রিভিউ আবেদন খারিজ করলেন আপিল বিভাগ।
এর আগে ২০০৯ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। সেই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচির আওতায় ২০০৯ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতাবাবদ মাসিক ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪২ হাজার থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ করা হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠদের সম্মানী ভাতা ১২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার, বীর উত্তমদের ১০ থেকে ২৫ হাজার, বীরবিক্রমদের আট থেকে ২০ হাজার এবং বীরপ্রতীকদের ছয় হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণির সাত হাজার ৮৩৮ জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, শহীদ পরিবার ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ পরিবারের মাসিক রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ প্রায় ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বর্তমানে প্রায় দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে পান। এর বাইরে দুই ঈদে দুটি বোনাস পাচ্ছেন। প্রতিটি বোনাসের পরিমাণ এক মাসের ভাতার সমান।
এফএইচ/জেডএ/বিএ
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ শিবিরের ৪ নেতাকে হাত ও চোখ বেঁধে গুলি করে পঙ্গু করা হয়
- ২ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ৯ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- ৩ সমাজসেবা অধিদপ্তরের ডিজিকে সরিয়ে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- ৪ যুবদল নেতা হত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে সাংবাদিক শেখ জামাল
- ৫ পঞ্চদশ সংশোধনীর রুলে পক্ষভুক্ত হলেন ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান