মইনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ৩ ফেব্রুয়ারি
নারী সাংবাদিককে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামশ জগলুল হোসেন এ দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। মইনুল মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি অসুস্থ থাকায় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হতে না পারায় সময়ের আবেদন দাখিল করেন তার আইনজীবী। সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক।
এর আগে ২৯ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মইনুলের অধিকতর জামিন শুনানির জন্য ৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।
বাদী সুমনা আক্তার লিলি মামলার অভিযোগে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছি। গত ১৬ অক্টোবর নিজ বাসায় ৭১ টেলিভিশনের টকশো দেখছিলাম। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী মইনুল তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।’
‘মইনুল হোসেনের এ মন্তব্য নারী জাতির সম্মান হানি ঘটিয়েছে। অথচ তিনি ক্ষমা চাননি। বরং গত ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টা থেকে ২২ অক্টোবর রাত ৯টার মধ্যে পুনরায় একটি টেলিফোন অডিও রেকর্ড ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করেন। মইনুল হোসেন নিজে অডিও রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।’
অভিযোগে আরও বলা হয, ‘মইনুল হোসেন ইংরেজি দৈনিক নিউনেশন পত্রিকার প্যাডে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কিত বিতর্কিত ব্যাখ্যার আড়ালে পুনরায় ফেসবুকে মাসুদা ভাট্টির ব্যক্তিগত চরিত্র জঘন্য বলে মন্তব্য করেন।’
এ ঘটনায় ২৪ অক্টোবর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামশ জগলুল হোসেনের আদালতে মইনুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলাটি করেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য সুমনা আক্তার লিলি।
আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। গত ২৬ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে গুলশান থানা। ২৭ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত এজাহারটি গ্রহণ করেন। ৯ নভেম্বর গুলশান থানার পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি ‘চরিত্রহীন’ বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনও প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’
মইনুলের এ ধরনের বাক্য ব্যবহারে সমালোচনা শুরুর পর তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা হয়। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন।
গত ২২ অক্টোবর এ ঘটনায় রংপুরের করা একটি মামলায় মইনুকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এ মামলায় ২৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।
জেএ/জেডএ/জেআইএম