বিচারপতির প্রতি খালেদা জিয়ার আইনজীবীর অনাস্থা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন আসনে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের বিষয়ে দায়ের করা পৃথক তিনটি রিটের শুনানিতে একক বেঞ্চের বিচারপতির প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। খালেদার রিট শুনানিতে প্রধান বিচারপতির ঠিক করে দেয়া তৃতীয় বেঞ্চে ন্যায়বিচার পাওয়ার ‘আস্থা নেই’ বলে জানান তারা। এরপরই আদালত সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এর ফলে, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কী পারবেন না বিষয়টি সোমবার পর্যন্ত ঝুলে থাকল। তবে আইনজীবীরা লিখিতভাবে আদালতের প্রতি কোনো অনাস্থা আনেননি বা প্রধান বিচারপতির কাছেও অনাস্থার বিষয়টি তুলে ধরেননি।
হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, খালেদার জিয়ার আইনজীবীরা বিচারপতির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে যান। পরে আগামী সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
আদালতে আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম।
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার রিট আবেদনের বিষয়ে বিভক্ত আদেশ দেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ রুলসহ মনোনয়নপত্র গ্রহণের আদেশ দিলেও বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির তা নাকচ করেন।
হাইকোর্টের দেয়া ওই বিভক্ত আদেশের কপি এবং সংশ্লিষ্ট নথি প্রধান বিচারপতির কাছে গত মঙ্গলবার (১১ডিসেম্বর) পাঠানো হয়। কিন্তু আদেশের কপি সংক্ষিপ্ত হওয়ায় প্রধান বিচারপতির কার্যালয় থেকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তা ফেরত পাঠানো হয়। পরে পূর্ণাঙ্গ কপি পাঠানো পর প্রধান বিচারপতি তৃতীয় বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন।
মামলার সব নথি বুধবার বিকেলেই ওই বেঞ্চে পাঠানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার পর শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেন বেঞ্চ। দুপুর দুইটায় ওই বেঞ্চে শুনানি হয়। শুরুতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, এ আদালতের প্রতি তাদের আস্থা নেই। তিনি আজ শুনানি না করার অনুরোধ জানান। এরপরই বিচারিক শুনানি মুলতবি করে আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।’
বিচারপতির প্রতি অনাস্থার বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বদরুদ্দোজা বাদল জানিয়েছেন, আমাদের এই আদালতের প্রতি আস্থা নেই। সৈয়দ রেফাত আহমেদ ছিলেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। সুপ্রিমকোর্টের বিধান হলো : একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি যদি কোনো মামলার শুনানি করেন তবে জুনিয়র কোনো বিচারপতি ওই মামলায় আর শুনানি করতে পারবেন না। সেই জন্য এই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়েছে।
খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে তিন আসনের মনোনয়নপত্রই বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর বিরুদ্ধে করা আপিলও গত ৮ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে ইসি। পরে ইসির সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পৃথক তিনটি রিট করেন খালেদা জিয়া। এই রিটের ওপরই ঝুলে আছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদার ভোটভাগ্য।
দুদকের দায়ের করা দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এদিকে তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এফএইচ/এনএফ/আরআইপি
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ চাঁদাবাজির সত্যতা মেলেনি: তারেক রহমানসহ ৮ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ
- ২ শিবিরের ৪ নেতাকে হাত ও চোখ বেঁধে গুলি করে পঙ্গু করা হয়
- ৩ সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ৯ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- ৪ সমাজসেবা অধিদপ্তরের ডিজিকে সরিয়ে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- ৫ যুবদল নেতা হত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে সাংবাদিক শেখ জামাল