ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন ‘কালো আইন’ : আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:১২ এএম, ০৬ নভেম্বর ২০১৮

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনটি ‘কালো আইন’ বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। হবিগঞ্জের মো. লিয়াকত আলী (৬১) ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আমিনুল ইসলাম (৬২) ওরফে রজব আলীর রায় ঘোষণার পর সোমবার ট্রাইব্যুনালের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

গাজী এম এইচ তামিম বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হননি। কারণ হলো, আসামি লিয়াকত আলী ১৯৭২ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যদি অপরাধ করতেন তাহলে স্বাধীনতার পরপরই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হতো। কিন্তু এত বছরেও তা হয়নি।’

আসামি আমিনুল ইসলামের বেলায়ও একই ঘটনা। স্বাধীনতার এত বছর গেল কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো মামলা হয়নি।

তামিম বলেন, ‘যেহেতু আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তাই প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপরই নির্ভর করতে হয়েছে। প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে বলে আমি মনে করি না। তারপরও ট্রাইব্যুনাল আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছে এই কালো আইনের অধীনে।’

কেন এটিকে ‘কালো আইন’ বলছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ আইনে আসামিদের কোনো সুযোগ বা অধিকার দেয়া হয়নি। এই অর্থে এটি কালো আইন।’

রায়ের পর এ মামলার প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত সাংবাদিকদের কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যে সাতটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল প্রসিকিউশন তার সবকটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল এ দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা শহীদ রঙ্গু মিয়ার ছেলে মো. জুম্মান মিয়া এ মামলার তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।

রায়ের পর জুম্মান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায়ে আমি এবং আমার পরিবার খুবই খুশি। ট্রাইব্যুনাল, প্রসিকিউশনের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। স্বাধীনতার এত বছর পর এই আসামিদের বিচার করার জন্য। সরকারের কাছে অনুরোধ জানাব, পলাতক আসামিদের ধরে তাদের সাজা কার্যকরের জন্য। তবেই আমরা শহীদ পরিবার শান্তি পাব।’

এর আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পলাতক দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণ হওয়ায় তাদেরকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়া হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে জানান। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত দুই আসামি হলেন- হবিগঞ্জের লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. লিয়াকত আলী। একাত্তরে তিনি ছিলেন স্থানীয় রাজাকার কামান্ডার। আর কিশোরগঞ্জের আমিনুল ইসলাম ছিলেন ওই এলাকার আল-বদর বাহিনীর নেতা।

রায় ঘোষণার সময় চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুসহ প্রসিকিউশন টিমের সদস্যরা, তদন্ত সংস্থার প্রধান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাক্ষী, রাষ্ট্র নিয়োজিত আসামিপক্ষের আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

এফএইচ/এমএআর/বিএ

আরও পড়ুন