‘ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষ বিচার করছে’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেছেন, ৩৫তম মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার মাধ্যমে প্রমাণ হলো যে ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষ বিচার করছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক মুসলিম লীগ নেতা হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মো. লিয়াকত আলী (৬১) ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আমিনুল ইসলাম (৬২) ওরফে রজব আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর সোমবার ট্রাইব্যুনালের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলেন তিনি।
প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, মামলায় সাত অভিযোগের চারটি ছিল গণহত্যার। শেষ তিনটি ছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ। দিনের বেলা আক্রমণ চালিয়ে গণহত্যায় শতাধিক হিন্দুকে হত্যা করা হয়, এই বর্বর অপরাধ সংগঠনে আসামিরা প্রত্যক্ষ এবং নিষ্ঠুর অংশগ্রহণ ছিল।
তিনি বলেন, আসামিপক্ষ থেকে বলা হয় যে, আসামি লিয়াকত আলী ২০০৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত হবিগঞ্জ লাখাই উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি এসব অপরাধের সঙ্গেও ছিলেন না এবং রাজাকারও না। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অপরাধ সংঘটনে সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণ প্রমাণিত হলে অপরাধে সংঘটনের পরবর্তী রাজনৈতিক অবস্থান তাকে অপরাধ সংঘটনের দায় হতে অব্যাহতি দেবে না।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, বিচারের মাধ্যমে যে বর্বর গণহত্যার চিত্রটি সত্য হিসেবে বেরিয়ে এসেছে তা ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার একটি খণ্ডিত চিত্র মাত্র। শেষের তিনটি অভিযোগ ছিল নির্মম। তারা নিরস্ত্র নাগরিকদের গুলি করে হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছে।
রেজিস্ট্রার প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, অপরাধের ব্যাপকতা, নির্মমতা এবং প্রকৃতি বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল মনে করেছে যে ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজন, ভিকটিমদের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত হবে যদি তাদেরকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সে জন্য সাতটি অভিযোগে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই মামলার রায়ই প্রমাণ করে ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষ।
এতদিন রায় ঘোষণার পর আজ হঠাৎ করে ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষ বলার প্রয়োজন কেন পড়লো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তাই একজন আওয়ামী লীগ নেতার রায় দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ (আদালত) ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষ আবারও প্রমাণ হলো।
এফএইচ/বিএ