বোর্ড চাইলে পছন্দমতো চিকিৎসক পাবেন খালেদা
কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াক দ্রুত বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। চিকিৎসার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং সরকারকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এবং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর সদস্য নয় এমন তিনজনসহ স্বল্প সময়ের মধ্যে খালেদার চিকিৎসায় ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির দুই সদস্য বিএসএমএমইউর চিকিৎসক আবদুল জলিল চৌধুরী ও বদরুন্নেসা আহমেদ নতুন এই বোর্ডে থাকবেন।
আদালত বলেছেন, আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) তার পছন্দ অনুসারে ফিজিওথেরাপিস্ট, গাইনোকোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিতে পারবেন। তবে পাঁচ সদস্যের বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউ-এর বাইরের পছন্দ মতো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারবেন।
দেশের বিশেষায়িত কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে খালেদার চিকিৎসা করার নির্দেশনা সংক্রান্ত একটি রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, মোখলেসুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন আবদুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, কামরুল ইসলাম সজল, রাগিব রউফ চৌধুরী, এহসানুর রহমান, আতিকুর রহমান, ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ।
আদেশের পর এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে ও চিকিৎসাসেবায় ৫ সদস্যের একটি বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিএসএমএমইউর চিকিৎসক আবদুল জলিল চৌধুরী ও বদরুন্নেসা আহমেদ এ বোর্ডে থাকবেন।
আদালত বলেছেন, অপর তিনজন সদস্য সরকার মনোনয়ন করবে। তবে ওই তিনজনের কেউই কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের স্বাচিপ ও ড্যাবের বর্তমান বা অতীত সদস্য সমর্থক হতে পারবেন না। বোর্ডকে দ্রুত খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি ও চিকিৎসাসেবা শুরুর নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
চিকিৎসার নির্দেশনার বিরুদ্ধে আপিল করবেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি আদেশ দেয়ার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলাম। যে ধরনের আদেশ দিয়েছেন তাতে মনে হয় না আপিল করার প্রয়োজন হবে। তবে, আদেশ হাতে পাওয়ার পরে দেখি কোন বিষয়ে আপিল করার সুযোগ রয়েছে কিনা। তারপর সিদ্ধান্ত নিবো।
এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর এই শুনানি ১ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে পর-পর দুই দিন শুনানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন ঠিক করা হয়।
তারও আগে দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। গত ৯ সেপ্টেম্বর রিটটি দায়েরের পর এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, রিটে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নির্দেশ এবং এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন
- ২ হাসান আরিফের মৃত্যুতে দেশ আইনের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হারালো
- ৩ সকালে হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা, মেয়ে দেশে ফিরলে দাফন
- ৪ ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা: দুই কিশোরের স্বীকারোক্তি, একজন রিমান্ডে
- ৫ ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: ছাত্রলীগের দুই নেতা কারাগারে