বিচার বিভাগ চাপের মুখে রয়েছে : সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে পদত্যাগে বাধ্য করে পুরো বিচার বিভাগকে এখন নির্বাহী বিভাগের আওতাধীন করা হয়েছে। বর্তমান বাংলাদেশের বিচার বিভাগ চাপের মুখে রয়েছে। বিচার বিভাগ পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভৌতিক মামলা দিচ্ছে।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, বিচারপতি সিনহা তার বইয়ে যেসব বিষয় উল্লেখ করেছেন তা জাতির জন্য খুবই দুঃখ ও লজ্জাজনক। সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে আমাদের বিবেককে দংশন করে। সরকারের এই হস্তক্ষেপ মঙ্গল বয়ে আনবে না। এসবের নিন্দা জানাচ্ছি।
সম্প্রতি আত্মজীবনীমূলক একটি বই প্রকাশ করেছেস সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। এ বইয়ে তিনি দাবি করেছেন, সরকারের চাপ এবং হুমকির মুখে তাকে দেশত্যাগ করতে হয়েছে। এ ব্রোকেন ড্রিম -নামের বইটিতে বিচারপতি সিনহা বর্ণনা করেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়টিকে কেন্দ্র করে তার ওপর সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে চাপ তৈরি করা হয়েছিল।
এসব অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেন, সাবেক হওয়ার অন্তর্জ্বালা থেকেই মনগড়া বই লিখেছেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি সাবেক হয়ে গেছেন। সাবেক হওয়ার অন্তর্জ্বালা আছে। কী পরিস্থিতিতে সাবেক হয়েছেন তা সবাই জানে। বই লিখে মনগড়া কথা বলবেন বিদেশে বসে, সেটা নিয়ে কথা বলার কোনো প্রয়োজন আছে? ক্ষমতা যখন থাকে না তখন অনেক অন্তর্জ্বালা গড়ে ওঠে।
শুক্রবারের অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদনীর আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবি সমিতি সব সময় আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য দাবি করে আসছে। গত এক বছর আগে আপনাদের মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের ব্যাপারে যে তথ্য এবং কথা বলেছিলাম, তাই আজকে সাবেক প্রধান বিচারপতির লিখিত বইয়ে প্রকাশ পেয়েছে।
সমিতি দাবি করে, সাবেক বিচারপতি এস কে সিনহাকে জোর করে পদত্যাগের পরই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে ওই রায়টিও বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তার বিচারের জন্য কারাগারে আদালত বসানো হয়েছে এবং তার অনুপস্থিতিতেই বিচার কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি এসব বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের নগ্ন হস্তক্ষেপ। আমরা এ বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সম্পাদক কাজী মো. জয়নাল আবেদীনসহ সমিতির বিএনপিপন্থী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এইচএস/এনএফ/এমএস